দেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে কুয়াশার একটি প্রবাহ প্রবেশ করবে দেশে
স্টাফ রিপোর্টার: দিনভর মেঘলা আকাশে সারাদেশে ফের শীত জেঁকে বসেছে। সূর্যের দেখা না পাওয়ায় আগের দিনের চেয়ে শীত বেড়েছে। উত্তরের জেলাগুলোতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত তিনদিন সারাদেশেই ঝলমলে রোদ থাকায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছিলো। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপামাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ছিলো ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন ছিলো ১৮ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো চট্টগ্রামে ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা কিছুটা বেড়ে যায়। হিমেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিও ছিল থেমে থেমে। চলতি শীত মরসুমের তৃতীয় দফায় শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। মাঘ মাস শুরুতেই যেন নতুন রূপে ফিরেছে শীত। মাঘ মাসে বাঘ কাঁপে প্রবাদকে সত্য প্রমাণ করতেই এই শীত এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে উত্তরের জেলাগুলোতে ঘন কুয়াশার কারণে দুপুর পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। কনকনে শীতে কাহিল হয়ে পড়েন দুস্থ ও খেটে খাওয়া মানুষ। চলতি সপ্তাহে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শনিবার পর্যন্ত থাকবে এমন মেঘলা আকাশ। মেঘের দাপট কমে আগামীকাল রোববার আকাশে উঁকি দিতে পারে রোদ আর সরতে শুরু করবে মেঘ। এতে দেশের উত্তরাঞ্চল দিয়ে কুয়াশার একটি প্রবাহ প্রবেশ করবে দেশে। এ কারণে বাড়বে শীত। বয়ে যাবে শৈত্যপ্রবাহ। এরপর আগামী ২৩ জানুয়ারি থেকে আরেকবার বৃষ্টি ঝরতে পারে। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ কখনও ছিলো মেঘলা, কখনও মেঘের আড়ালে উঁকি দিয়েছে সূর্য। এতে দেখা দেয় শীতের আবহ। নানা কাজে বের হওয়া অনেকের গায়েই ছিলো শীতের পোশাক।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, শনিবার দেশের অনেক স্থানে রোদের দেখা মিলতে পারে। আবার কিছু কিছু জায়গায় মেঘলা আবহাওয়া থাকতে পারে। তবে আগামীকাল রোববার থেকে পুরো ঝলমলে আকাশের দেখা মিলবে দেশের সবখানে। এরপর শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।
আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলের তথ্য তুলে ধরে কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল সমকালকে জানান, আগামী ২৩ থেকে ২৫ জানুয়ারি আবারও সারাদেশে বৃষ্টি হতে পারে। তবে এবার খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বেশি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। আর উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও এর কাছাকাছি এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে। মরসুমের লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চট্টগ্রামে ৩১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।