টাকা ফেরত না পেয়ে নয়মাইলে সততা ব্রিকস ইটভাটার সামনে ভুক্তভোগীদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন
পাঁচমাইল প্রতিনিধি: ৮ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন সততা ব্রিকস এ- কনস্ট্রাকশনের মালিক। গত দুই বছরে ইট দেয়ার নামে প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষের কাছ থেকে এসব অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। টাকা ফেরত না পেয়ে অবশেষে কয়েকশ ভুক্তভোগী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জ দশমীতে অবস্থিত সততা ব্রিকস প্রাঙ্গণে টাকা ফেরতের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় বিক্ষোভকারীরা। বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। ১৫ বছর পূর্বে জেলা সদরের বদরগঞ্জ দশমীপাড়ার সুবেদার সততা ব্রিকস এ- কনস্ট্রাকশন নামে একটি ইটভাটা প্রতিষ্ঠা করেন। সুনামের সহিত অত্র ব্যবসা চলে আসছিলো। গত ৩ বছর আগে সততা ইটভাটার মালিক সুবেদার মারা যান। এরপর ব্যবসার হাল ধরেন তার স্ত্রী খোদেজা বেগম, ভাই শরিয়ত উল্লাহ ওরফে মেজর ও আব্দুল বারী। খোদেজা বেগম ব্যবসার পাশাপাশি আলিয়ারপুর আজিজ মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। সুচতুর এই তিন ব্যবসায়ী গত দুই বছর ধরে বদরগঞ্জ ও সরোজগঞ্জ এলাকার আশেপাশের ২০ গ্রামের সাড়ে ৩শ মানুষের কাছে কম দামে ইট দেয়ার নামে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। গতবছর কিছু মানুষকে ইট দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামলে নিয়ে আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নেয়। চলতি মরসুমে তারা ইটভাটা চালুই করেনি। এতে টাকা লগ্নিকারকদের মনে আরো সন্দেহ দানা বেধে ওঠে। এক পর্যায়ে টাকার দাবিতে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। অনেকেই লোকলজ্জার ভয়ে টাকা বিনিয়োগের কথা স্বীকার করছেন না।
টাকা লগ্নিকারী এনজিও কর্মী কামরুজ্জামান বলেন, ইট নেয়ার জন্য আমি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিলাম। প্রতি ট্রাক অর্থাৎ ২ হাজার ইটের মূল্য ধরেছে ১৪ হাজার টাকা। নতুন ইট উঠলে আমার ইট দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তার আগেই তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। আমার মতো অনেক মানুষ গরু ছাগল বিক্রি করে ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে সস্তায় ইট কেনার জন্য টাকা জমা করেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে ইটভাটা প্রাঙ্গনে টাকা লগ্নিকারী নারী-পুরুষেরা জড়ো হন। তারা টাকা জমা দেয়ার রশিদ হাতে নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন। এর আগে যারা সততা ব্রিকস এ- কনস্ট্রাকশনে টাকা জমা দিয়েছে তাদের নাম ও টাকার পরিমাণ একটি রেজিস্ট্রার খাতায় অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ভুক্তভোগী কয়েকজন সদস্য। সন্ধ্যা পর্যন্ত যারা রেজিস্ট্রার খাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে তাদের সংখ্যা ৩১৮ জন। টাকার পরিমাণ ৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩১ হাজার।
এদিকে জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মোতালেব হোসেন বলেন, সততা ব্রিকস আমাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত নয়। সেজন্য সমিতির পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই করার নেই। তিনি আরো বলেন, কোনো ভাটায় ইট কেনার জন্য আগে থেকে টাকা দেবেন না।