মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করেছে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও হয়েছে রেকর্ড। শতভাগ পাস এবং শূন্য পাসের প্রতিষ্ঠান বিবেচনায়ও এবার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। যদিও করোনা মহামারীর কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শুধু বিভাগভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো পরীক্ষা।
যশোর শিক্ষাবোর্ডে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পাসের হার ৯৩.০৯ শতাংশ। এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ হাজার ৪৬১ পরীক্ষার্থী। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১৪ হাজার ২২৪ জন, মানবিক বিভাগে ১ হাজার ৩৬৯ জন ও বাণিজ্য বিভাগে ৮৬৮ জন রয়েছে। এবারই প্রথম খুলনা বিভাগের ২৫৫টি মাধ্যমিক স্কুল থেকে সবাই পাস করেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ফলাফলে খুলনা বিভাগে শীর্ষে রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯৪.৭৬। এরপর দ্বিতীয় স্থানে খুলনায় পাসের হার ৯৪.৪৯। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বাগেরহাট। এছাড়া চতুর্থ যশোর, পঞ্চম চুয়াডাঙ্গা, ষষ্ঠ নড়াইল, সপ্তম কুষ্টিয়া, অষ্টম মেহেরপুর, নবম ঝিনাইদহ এবং দশম স্থানে রয়েছে মাগুরা। এসএসসিতে এ বছর পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় মোট এক লাখ ৭৮ হাজার ৭৯৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ গ্রহণ করে। এদের মধ্যে ছেলে ৯১ হাজার ৫৯৯ জন ও মেয়ে ৮৭ হাজার ১৯৬ জন। মোট পাসে হার ৯৩.০৯ শতাংশ। পরীক্ষায় জিপিএ ৪ থেকে ৫ পেয়েছে ৩৯ হাজার ১০৯ জন। জিপিএ ৩.৫ থেকে ৪ পেয়েছে ২৯ হাজার ৫২৭ জন, জিপিএ ৩ থেকে ৩.৫ পেয়েছে ৩৪ হাজার ৫৯৪ জন, জিপিএ ২ থেকে ৩ পেয়েছে ৪৪ হাজার ৭৯ জন এবং জিপিএ ১ থেকে ২ পেয়েছে ২ হাজার ৬৬৯ জন। অবশ্য এবারের সার্বিক ফলাফলে ছেলেদের থেকে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসির ফলাফলে এবার চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় জিপিএ-৫ প্রাপ্তি এগিয়ে রয়েছে। এ স্কুল থেকে এবার ১২৪ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৯৬ জন ছাত্রী। এরমধ্যে ফেল করেছে ৩জন। চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ বছর ২৮১ ছাত্র এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে একজন মাত্র ফেল করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮৩ জন। ঝিনুক মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১২৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ১২০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১জন। এমএ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৩৬ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ১২৯ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। চুয়াডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২১ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করেছে ১১০ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। চুয়াডাঙ্গা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫৯ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়। উত্তীর্ণ হয়েছে ৫২ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে দুজন ছাত্রী। রাহেলা খাতুন গার্লস একাডেমির ৭১ ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ৬৩জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে তিনজন। চুয়াডাঙ্গা একাডেমির ৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৭৪ জন। এরমধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র একজন। আল হেলাল মাধ্যমিক ইসলামি একাডেমি থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয় ২৭ জন। পাস করেছে ২৬ জন। এ প্রতিষ্ঠানের কেউ জিপিএ-৫ পায়নি। হাজরাহাটি-তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর ৪১ জনের মধ্যে পাস করেছে ৩৪ জন। ফেল করেছে ৭ জন। এ স্কুল থেকে কোনো শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়নি।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় মেহেরপুর সদর উপজেলায় শতকরা ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় মেহেরপুর সদর উপজেলা থেকে ২ হাজার ৯৮৪ জন অংশ নিয়ে ২ হাজার ৬৯১ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২৩৫ জন। তবে এবছরও সেরাদের সেরা হয়েছে মেহেরপুর জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অন্ড কলেজ। তাদের ৮৩ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ৫৪ জন। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এবারও সেরা হয়েছে জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। দ্বিতীয় স্থানে আছে গাংনী সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মেহেরপুর জেলার তিন উপজেলার চারটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনওটিতেই শতভাগ পাস করেনি। জেলায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। চতুর্থ স্থানে রয়েছে মেহেরপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়।
এদিকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দেয়া তথ্য মতে মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৫ জন অংশ নিয়ে ১৯৪ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪৪ জন। মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় হতে ২৭৭ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ২৭৩ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫৮ জন। মোমিনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ২৩৯ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ২১৯ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৭ জন। আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ২২৯ জন অংশ নিয়ে ১৮৩ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১৬ জন। আমঝুপি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় হতে ১০১ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৮৫ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪ জন। যাদুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ হতে ১৩৯ জন অংশ নিয়ে ১৩২ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫ জন। বলিয়ারপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ১১১ জন অংশ নিয়ে ৯২ জন পাস করেছেন। মোমিনপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় হতে ৭৭ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৭২ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৪ জন। মেহেরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ হতে ৮২ জন অংশ নিয়ে ৬৬ জন পাস করেছেন। গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৬০ জন অংশ নিয়ে ৫৬ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২ জন। কামদেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৫৯ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪৫ জন। হাতিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৩৭ জন অংশ নিয়ে ৩২জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক জন। গোভীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৭৬ জন অংশ নিয়ে ৬০ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩ জন। আশরাফপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৭২ জন অংশ নিয়ে ৬৮ জন পাস করেছেন। সিএমসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৬৩ জন অংশ নিয়ে ৫৯ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ জন। সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৩০জন অংশ নিয়ে ২৯ জন পাস করেছেন। ঝাউবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৫০ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪৫ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২ জন। টেংরামালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৬৭ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৫৩ জন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক জন। কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিল হতে ৪১ জন অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন এক জন। সাহেবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৬৬ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৬০ জন। কলমিজোল মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৪৯ জন অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪৪ জন। বামনপাড়া কাজী কুদরুতুল ইসলাম মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৩৩ জন অংশ নিয়ে ২৯ জন পাস করেছেন। হরিরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৫৩ জন অংশ নিয়ে ৪২ জন পাস করেছেন। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৩ জন। শালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৬১ জন অংশ নিয়ে ৫৭ জন পাস করেছেন। আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ১১৪ জন অংশ নিয়ে ১০৯ জন পাস করেছেন। আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ১১৪ জন অংশ নিয়ে ১০৯ জন পাস করেছেন। সুবিধপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ২৭ জন অংশ নিয়ে ২০জন পাস করেছেন। বাড়িবাঁকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৩০জন অংশ নিয়ে ২৯ জন পাস করেছেন। চকশ্যামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৪০ জন অংশ নিয়ে ৩৪ জন পাস করেছেন। কুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৯২ জন অংশ নিয়ে ৮০ জন পাস করেছে। কুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৯২ জন অংশ নিয়ে ৮০ জন পাস করেছে। উজুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ৫৪ জন অংশ নিয়ে ৪৮ জন পাস করেছে। ভৈরব মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় হতে ৩৯ জন অংশ নিয়ে ৩৭ জন পাস করেছে। শ্যামপুর-শালিকা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় হতে ৩৫ জন অংশ নিয়ে ৩৩ জন পাস করেছে। শোলমারী মাধ্যমিক বালিকা হতে ২৮ জন অংশ নিয়ে ২৫ জন পাস করেছে। মদনাডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা ১২ জনের মধ্যে খেকে ১০ জন পাস করেছেন।