আব্দুস সালাম: সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে এবার চুয়াডাঙ্গার ২৫জন মেধা তালিকায় ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ৪ হাজার ৩৫০টি আসনের বিপরীতে এ বছর মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিলো এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭।। প্রাপ্ত তথ্যমতে চুয়াডাঙ্গার ২৩ জন শিক্ষার্থী কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এবার ভর্তি পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হয়েছেন ৪৯ হাজার ১৯৪ শিক্ষার্থী। পাশের হার ৩৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে মেয়েরা উত্তীর্ণ হয়েছেন ২৮ হাজার ৩৮১ জন অর্থাৎ ৫৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর ছেলেদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০ হাজার ৮১৩ জন। যা ৪২ দশমিক ৩১ শতাংশ। ছেলেদের থেকে মেয়েরা ৭ হাজার ৫৬৮ জন বেশি পাশ করেছেন। তবে ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর ৯৪ দশমিক ২৫ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন রাফসান জামান। আর মেয়েদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর নম্বর ৮৮। এর মধ্যে ছেলেরা সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবেন ১ হাজার ৯৫৭ জন অর্থাৎ ৪৫ শতাংশ। আর মেয়েরা সুযোগ পাবেন ২ হাজার ৩৯৩ অর্থাৎ ৫৫ শতাংশ। এখানেও ছেলেদের থেকে মেয়েরা ৪৩৬ জন বেশি সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবেন। ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে ২০০ নম্বরসহ মোট ৩০০ নম্বরের মাধ্যমে সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য ৪ হাজার ৩৫০ জন শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। এ বছর মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ছিলো এক লাখ ৩৯ হাজার ২১৭। সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য মুক্তিযোদ্ধা, উপজাতি ও অ-উপজাতিদের জন্য নির্ধারিত আসন ছাড়া অবশিষ্ট আসনে ৮০ শতাংশ, জাতীয় মেধায় ২০ শতাংশ জেলা কোটায় প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। এর আগে গত ১০ মার্চ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের মতো এ বছরও সরকারি মেডিকেলে মোট আসন সংখ্যা রয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি। তবে গত বছর বেসরকারি মেডিকেলে আসন ছিলো ৬ হাজার ৪৮৯টি, এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬ হাজার ৭৭২টি।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবার ২৫ জন সরকারি মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ৩জন, মুগদা মেডিকেলে একজন, চিটাগাং মেডিকেলে একজন, ময়মনসিংহ মেডিকেলে একজন, রাজশাহী মেডিকেলে ৩জন, বরিশাল মেডিকেলে ২জন, রংপুর মেডিকেলে ৩জন, খুলনা মেডিকেলে ৪জন ও সিরাজগঞ্জ মেডিকেলে ২জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এছাড়াও গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, পাবনা, সিলেট ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে একজন করে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে যারা ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন তারা হলেন, আলমডাঙ্গা টার্মিনালপাড়ার মো. আখতারুজ্জামান ও মোছা. মনোয়ারা বেগমের ছেলে মো. আহসানউল্লাহ সজীব স্যার সল্লিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন। সজীব মেধা তালিকায় ৩০৫তম স্থান পেয়েছেন। তার স্কোর ছিলো ২৭৮.৫০। এছাড়াও স্যার সল্লিমুল্লাহ কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন আলমডাঙ্গার পাঁচকমলাপুরের মো. হাবিবুর রহমান হবি ও মোছা. রেক্সনা খাতুনের ছেলে মো. পলাশ হোসেন এবং জীবননগর শাপলাকলিপাড়ার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বজলুর রহমানের ছেলে আবুবক্কর লিখন। পলাশের মেধাক্রম ৪৩৯ এবং স্কোর ২৭৭.২৫। চুয়াডাঙ্গা পলাশপাড়ার মো. আব্দুস সালাম ও রুনা লাইলা দীপার মেয়ে ইলমা আফরিন মৈত্রি ঢাকা মুগদা মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তার মেধাক্রম ৭২৩, স্কোর ২৭৫.৫০। চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও রুবিনা খাতুনের মেয়ে নুসরাত জাহান অনন্যা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার মেধাক্রম ৯৬৫, স্কোর ২৭৪.২৫। চুয়াডাঙ্গা কুলচারা বিশ্বাসপাড়ার মো. আকবার আলী বিশ্বাস ও মোছা. নাসরীন আক্তারের ছেলে জার্জিস আহমেদ লিমন চট্টগ্রাম মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তার মেধা তালিকা ১১১৬, স্কোর ২৭৩.৫০। রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন যে ৩জন তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গা বেলগাছী ঈদগাপাড়ার মো. সোহেল রানা ও মোছা. শ্যামলি খাতুনের ছেলে মো. শাহারিয়ার জাহিদ উৎসব, চুয়াডাঙ্গা বেলগাছী রেলগেট এলাকার আবুল বাশার ও সেলিনা আক্তারের মেয়ে মিশকাতুল জান্নাত নিঝুম এবং দামুড়হুদা রামনগর কলাবাড়ির মোছা. হাসানুজ্জামান ও শিউলী খাতুনের মেয়ে মোছা. সানজানা জামান জীম। উৎসবের মেধাক্রম ১৪৪০, স্কোর ২৭২.৫। নিঝুমের মেধাক্রম ১৪৯০, স্কোর ২৭২.২৫ এবং জীমের মেধা তালিকা ১৫২৯, স্কোর ২৭৭.০০। জীম দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণের কারণে তার স্কোর দাঁড়িয়েছে ২৭২.০০। চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার মো. আমজেদ আলী ও মোছা. নার্গিস সুলতানার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ইফাত বরিশাল মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার সাইফুল ইসলাম ও হাসিনা পারভীন রুমার ছেলে ইফতেখার হাসনাইন সাদাফ বরিশাল মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। রংপুর মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন চুয়াডাঙ্গা থেকে ৩জন তারা হলেন, চুয়াডাঙ্গার কুঁকিয়া চাঁদপুরের মো. সাইদুর রহমান ও মোছা. মেরিনা খাতুনের মেয়ে রেজওয়ানা নাজনীন রিমু, চুয়াডাঙ্গা কার্পাসডাঙ্গা পীরপুরকুল্লার নোয়াজ্জেশ আহম্মেদ পরান ও নাজমা খাতুনের ছেলে নাইমুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা থানা কাউন্সিলপাড়ার শহীদুল ইসলাম ও রেশমা সুলতানার মেয়ে সুবহাতুন ইসলাম সুহা। সুহা দ্বিতীয়বার মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। খুলনা মেডিকেলেও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ৩জন। তারা হলেন, আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার মো. হাফিজুর রহমান ও মোছা. মুসলিমা খাতুনের ছেলে মিশকাতুল মেহেম, চুয়াডাঙ্গা ফার্মপাড়ার মো. আজিম উদ্দীন ও রিফাত শারমিনের মেয়ে আশফিকা তাহসিন ইথিকা, আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ার মো. আবু তালেব ও মোছা. সুমাইয়া পারভীনের মেয়ে মোছা. সানজিদা ইয়াসমিন রিয়া। কুমিল্লা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার মো. নুরুল ইসলাম ও মোছা. ফাহিমা খাতুনের ছেলে ইসতিয়াক ইসলাম শাওন, আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ার মো. মতিয়ার রহমান ও মোছা. রহিমা খাতুনের ছেলে মো. ইকবাল মাহমুদ সানভি ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জ বাজারের মনিরুজ্জামান মনা ও মোছা. শারমিন আক্তারের ছেলে সাকিবুজ্জামান মুগ্ধ পাবনা মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। মুগ্ধ দ্বিতীয়বার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার মো. মিজানুর রহমান ও মোছা. ফাতেমা খাতুনের ছেলে মো. ইসতিয়াক রহমান ঈশান গোপালগঞ্জ মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা গোরস্থানপাড়ার মো. আলী আক্তার খাঁন ও মোছা. সোনিয়া শারমীনের ছেলে অরিয়ান শিফাত খাঁন অরি সিরাজগঞ্জ মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অরি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। আলমডাঙ্গা গোকুলখালী বাজারের মো. একরামুল হক ও মোছা. জেসমিন খাতুনের মেয়ে মিথিলা ফারহানা ইমা সিরাজগঞ্জ মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এছাড়াও খুলনা মেডিকেল কলেজে হাসান রাব্বি ও সিলেট মেডিকেল কলেজে সুমাইয়া রহমান ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। প্রাপ্ত তথানুযায়ী উপরোক্ত তথ্য পাওয়া গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পাওয়া কেউ যদি বাদ পড়েন তাহলে প্রতিবেদকের মোবাইল নম্বর (০১৭১১-৩৯৭৩৯০) যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো।