স্টাফ রিপোর্টার: দুপুর গড়িয়ে বিকেল। নাওয়া-খাওয়া ভুলে ভূমিহীনদের নামে জমি রেজিস্ট্রি কাজে ব্যস্ত এক জনপ্রতিনিধি। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে কিছু নাস্তা এনে নিজেও খেলেন, ভূমিহীনদেরও খাওয়ালেন। গতকাল বুধবার দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রধান ফটকে এমনই দৃশ্য চোখে পড়েছে। বলছিলাম দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিমের কথা। সালাম বিনিময় শেষে কি করছেন? জানতে চাইলে একমুখ হাসি নিয়ে বললেন ভূমিহীনদের নামে জমি রেজিস্ট্রির কাজে এসেছি। বলাবাহুল্য একই দিনে অন্যান্য ইউনিয়নেও ভূমিহীনদের নামে জমি রেজিস্ট্রি কার্যক্রম করা হলেও দেখা মেলেনি কোনো চেয়ারম্যানের। অবশ্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বারদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। নিজ নামে সরকারি খরচে ২ শতক করে জমি রেজিস্ট্রিসহ পাকা বসতঘর পাচ্ছেন এমন খুশির সংবাদে ভূমিহীনদের মুখে দেখা গেছে হাসির ঝিলিক। আবার কারো কারো চোখে আনন্দ অশ্রু। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করেছেন উপস্থিত ভূমিহীনরা। কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম জানান, আমার ইউনিয়নে ১২ জনের নামে জমি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হলো। ১২ জনের মধ্যে সুবলপুরের মোস্তফা, মদনার জহিরুল, ধান্যঘরার রফিক, পীরপুরকুল্লার শাবানা খাতুন, কুড়–লগাছির রুহুল আমিন, রঘুনাথপুরের জমাত আলী ও মাহিরন এই ৭ জন এবং বাকি ৫ জন কার্পাসডাঙ্গা ভূমিহীনপাড়ার বাসিন্দা। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরও বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের সরকারিভাবে পাকাবসতঘর নির্মাণ করে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।
দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ জানান, উপজেলায় মোট ৬১টি ভূমিহীন পরিবার ঘর পাচ্ছেন। ৬১জনের মধ্যে প্রথম ধাপে ৮ জনের মাঝে জমির দলিলসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৫৩ জনের মধ্যে ৪০ জনের নামে জমি রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন হলো। আগামী ২১ জুলাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে একযোগে উদ্বোধন করবেন। আশা করছি উদ্বোধনের আগেই বাকি ১৩ জনের নামেও জমি রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। প্রত্যেকের নামেই দুই শতক করে জমি রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, জুড়ানপুর ইউনিয়নে ৯জন, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নে ৭জন, হাউলী ইউনিয়নে ২জন, নাটুদহে ৩ জন, নতিপোতায় ৭জন এবং কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে ১২জন মোট ৪০ জনের নামে জমি রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগম জানান, দেশের বিপুল সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে নিজস্ব ঠিকানা করে দেয়ার মাধ্যমে মামনীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সামনে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দুই শতাংশ করে খাস জমির মালিকানাসহ দলিলপত্র উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।