অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, এটি অত্যন্ত গৌরবের বিষয় যে আমাদের জাতীয় কবি চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গায় সপরিবারে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯২৬ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে স্ত্রী প্রমীলা, বড় ছেলে বুলবুল ও শাশুড়ি গিরিবালাকে নিয়ে কার্পাসডাঙ্গায় প্রায় দু’মাস অবস্থান করেন। কার্পাসডাঙ্গায় অবস্থানকালীন কবি অবসর সময়ে মিশন স্কুলের বাগান সংলগ্ন ভৈরব নদীর ¯œানঘাটের শান বাঁধানো সিঁড়িতে বসে রচনা করেছেন অনেক গান, কবিতা ও প্রবন্ধ। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, লিচুচোর, ‘কলসী গেল ডুবে’, কোন কূলে আজ ভিড়লো তরী এ কোন সোনার গাঁয়’ ও ‘পদ্ম গোখরো’ ইত্যাদি। জাতীয় কবির স্পর্শ ধন্য সেই ভৈরব নদী পাড়ের স্নানঘাটের সিঁড়িটির অংশ বিশেষ এখনো বিদ্যমান আছে।
চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গায় দুদিনব্যাপী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তীর ১ম দিনে গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। বেলা ১১টায় বিদ্রোহী কবিতার ওপর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় আলোচনা সভা কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় কর্মসূচির আয়োজন করে করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সুব্রত ভৌমিক, চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মনজু, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগম। মুখ্য আলোচক ছিলেন কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আব্দুল হামিদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সভাপতি সাবেক অধ্যাপক আব্দুল গফুর।, স্বাগত বক্তব্য রাখেন নজরুল স্মৃতি বিজড়িত আটচালা ঘরের মালিক প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল। অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইটি) আরাফাত রহমান, দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কামিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ, সহকারী কমিশনার বিএম তারিক উজ জামান, সহকারী কমিশনার শেখ মো. রাসেল, সহকারী কমিশনার সুরাইয়া মমতাজ, সহকারী কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী কমিশনার মো. জাকির হোসেন, সহকারী কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, সহকারী কমিশনার শহিদুল আলম, সহকারী কমিশনার মোহা. মেহেদি মাসুদ। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান, কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল ইসলাম, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাফিক মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক নজির আহমেদ, দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম হুমায়ুন কবীর, আ.লীগ নেতা আ. সালাম বিশ্বাস, শহিদুল সর্দ্দার, জাহিদুল ইসলাম মুকুল, আবদুল হামিদ, ফয়সাল, কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের যুগ্ম-সম্পাদক ও সাংবাদিক হাসমত আলী, সাংবাদিক জিল্লুর রহমান মধু, সাংবাদিক রতন বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ ও জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা বেগম। আলোচনা অনুষ্ঠানের শেষে চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সঙ্গীত ও নৃত্য এবং কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের শিল্পীরা নজরুল সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে নজরুল রচনা পাঠ, আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার সকালে মেহেরপুর সরকারি কলেজের বৈশাখী চত্বরে এ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মেহেরপুর সরকারি কলেজে আয়োজিত আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. আব্দুর রাজ্জাক, সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল আমিন ধুমকেতু, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল বশির, অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক ইফতে খাইরুল ইসলাম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যক্ষ মো. ফুয়াদ খাঁন, ইংরেজি প্রভাষক মো. মাহফুজ আলী ও বাংলা প্রভাষক মনিরুজ্জামান। এছাড়া সেখানে অন্য প্রভাষকগণ ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মেহেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা নৃত্য এবং কাজী নজরুল ইসলামের বিভিন্ন কবিতা ও গান পরিবেশন করেন।