দর্শনা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দর্শনার বাড়াদী সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক শেষে বাংলাদেশি দুই যুবকের লাশ ১৬দিন পর ফেরত দিয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টায় দুই দেশের মধ্যে এ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দর্শনা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের বেকারাস্তা পাড়ার সাজেদুর রহমান ওরফে সাইদুল ও একই পাড়ার খাঁজা মঈনুদ্দিনসহ পাঁচ-ছয়জন সঙ্গবদ্ধ গরু চোরাকারবারি ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর দর্শনার কামারপাড়া-বাড়াদী সীমান্তের ৮২ মেইন পিলারের কাছ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে। ওই দিন দিবাগত গভীর রাতে চোরাকারবারিরা ভারতের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানাধীন ৩২ গোবিন্দপুর বিএসএফ ক্যাম্পের একটি টহল দলের মুখোমুখি হয়। এ সময় বিএসএফ দল চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুরলে গুলিবৃদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয় সাইদুল ও খাঁজা মইনুদ্দিন নামের দুই গরু চোরাকারবারি। ঘটনার পরদিন রোববার সকালে ভারতের গোবিন্দপুর ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা লাশ দুটি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর লাশ ফেরত চেয়ে বিজিবি-বিএসএফকে পত্র দিলেও বিএসএফ তাতে সারা না দেয়ায় লাশ ফেরত পাওয়া যায়নি। এদিকে গত বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে দর্শনা বাড়াদী সীমান্তে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও আইনী জটিলতার কারণে নিহতদের লাশ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান বিজিবি। ফলে লাশ নিয়ে ফিরে যায় বিএসএফ। আইনি জটিলতা কাটিয়ে গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাড়াদী সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের এডি হায়দার আলী, ভারতের কাদিপুর বিএসএফ কমান্ডার সুবেদার এসপি সিং, বলবীর সিং, ভারতের কৃষ্ণগঞ্জ থানার আইসি ইন্সপেক্টর বাবিন মুখার্জি, এসআই প্রকাশ শিকদার, দামুড়হুদা উপজেলা মেডিকেল অফিসার ডা. মহিবুল্লাহ, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা, এসআই সোহেল রানা। বৈঠক শেষে নিহত সাইদুল ও খাঁজার লাশ ফেরত দেয় ভারতীয় পুলিশ। লাশ গ্রহণ করে দর্শনা থানা পুলিশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেছে। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা জানান, ৮২ পিলারের কাছে কৃষ্ণনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপেন সরকার লাশ হস্তান্তর করলে আমি দর্শনা থানার ওসি হিসেবে লাশ দুটি গ্রহণ করি। সন্ধ্যার পর লাশ তাদের পরিবারের কাছে বুঝে দেয়া হয়। গতকালই সন্ধ্যার পর স্থানীয় গোরস্থানে দুজনের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।