স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায়ে ও আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা এবং জীবননগরের উপজেলা পর্যায়ে আয়োজিত মেলার পুরস্কার বিতরণ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা ও জীবননগরে আয়োজিত পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া হয়ে যেতো মন্তব্য করে এমপি টগর বলেন। আজকে সামাজিক নিরাপত্তা থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ সবক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ দৃঢ় গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদি পরাজিত শত্রæরা ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট না ঘটাতো, যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন বাংলাদেশ অনেক আগেই সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়া হয়ে যেতো। তিনি বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিলো। আমার নির্বাচনী এলাকায় ইন্টামিডিয়েট, ডিগ্রি কলেজে পর্যন্ত শহীদ মিনার ছিলো না। আমরা এই অবস্থার মধ্যে ছিলাম। এখন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। হাজি আলী আজগর টগর এমপি আরও বলেন, যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করেছে। তারা মাদরাসার একটি বিল্ডিংও করেনি। আজকে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নয়ন করছে।
প্রধান অতিথির দেয়া বক্তব্যে হাজি আলী আজগার টগর এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শক্ত হাতে যেভাবে শেকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমাদের দেশ আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দেশ আজ মধ্যমায়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে। শুধু তাই নয় ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত রাষ্ট্রে পদার্পণ করবে। শেখ হাসিনা আজকে এই দেশকে যেভাবে মধ্যমায়ের দেশে পরিণত তা বিশে^ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে তিনি ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার আহŸান জানান।
হাজি আলী আজগার টগর এমপি তার দেয়া বক্তব্যে আরও বলেন, স্বাধীনতার এই সুবর্ণজয়ন্তীতে আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে স্বাধীনতা বিরোধীদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার। আমাদের মনে রাখতে হবে বিএনপি-জামায়াত আবারো তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে মাঠে-ময়দানে একত্রিত হয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমি আপনাদের আহŸান জানাবো উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।
চুয়াডাঙ্গায় জেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে চাঁদমারী মাঠে আয়োজিত মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মালিক। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাজিয়া আফরীন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামিম ভূইয়া, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল হাসান, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেমদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুম আহমেদ, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আফসানা ফেরদৌসী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সপ্তাহ ব্যাপী উন্নয়ন মেলা জীবননগরে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ুন কবির ও পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) শেখ মাহবুবুর রহমান। মেলার উপজেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ২৮টি স্টল তাদের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। প্রতিটি স্টলে বর্তমান সরকারের যেসকল দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে তার প্রতিটি চিত্র তুলে ধরা হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ূব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. সালমুন আহমেদ ডন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অগ্নি সেনা মঈন উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নূর মোহাম্মদ জকু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াজেদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলতাব হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শামীম রেজার উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহিল কাফি, মৎস্য কর্মকর্তা ফাতেমা কামরুন্নাহার আঁখি, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল রানা, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামসুজ্জোহা, সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৃষিবিদ গোলাম সরোয়ার মিঠু, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশুরা খাতুন, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সটেক্টর জামাল হোসেন, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. মঞ্জুরুল হক বেলু, উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক, সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হাসিবুজ্জামান, বিআরডিবি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন প্রমুখ। ৭ দিনের এ মেলা সমাপনী দিনে সকল স্টলের মধ্যে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারকারী স্টলের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস স্টল প্রথম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ দ্বিতীয় এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, দামুড়হুদায় ৭দিনব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরের মুক্তমঞ্চে সমাপনী অনুষ্ঠানে ও মুক্তির উৎসব সুবর্ণজয়ন্তী মেলাসহ বিভিন্ন ইভেন্টে প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলি মুনছুর বাবু। বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি মাহাফুজুর রহমান মনজু, উপরজলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুদীপ্ত কুমার সিংহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম নুরুন্নবী, দামুড়হুদা মডেল থানার (ওসি) তদন্ত আব্দুল্লা আল মামুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আছির উদ্দীন। অনুষ্ঠান শেষে মুক্তির উৎসব সুবর্ণজয়ন্তী মেলা ২৭টি স্টলের মধ্যে প্রথম পুরস্কার তুলে নেয় উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ, ২য় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও ৩য় উপজেলা কৃষি অফিস স্টল।
এছারও অন্যদের সান্ত¦না পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়াও ৭মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষন,কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্গন অংকন, সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপজেলা সমবায় অফিসার আব্দুল্লা আল মামুন।