গড়াইটুপি প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার বড়শলুয়ায় ডাকাতির অভিযোগ করে জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে সাহায্য চান বসতিপাড়ার রবিউল ইসলামের পরিবার। পরে রাতেই দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ও স্থানীয় তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশ উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিবরণ শুনতে গেলে তাদের উল্টো-পাল্টা কথা শুনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগীর বাড়িতে রাত আনুমানিক দেড়টায় সংঘবদ্ধ ১০-১২ জন ডাকাতদল প্রবেশ করে একজনকে বেঁধে তাদের নগদ টাকা ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়শলুয়া বসতিপাড়ার রবিউলের বাড়িতে গতপরশু রাত দেড়টার দিকে মুখোশধারী ১০-১২ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগ করে সরকারি জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের সাহায্য চান। পরে ঘটনাস্থলে স্থানীয় পুলিশ ও দর্শনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের কথাবার্তায় অসঙ্গতি পেলে সন্দেহের দানা বাধে। ওই ঘটনায় প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চুয়াডাঙ্গা (দামুড়হুদা) সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ এএইচএম লুৎফুল কবীর।
স্থানীয়রা আরো জানান, মূল ঘটনা আনুর ছোট ছেলে হাসান বসুতিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী পাশ্ববর্তী ছয়ঘরিয়া গ্রামের মাসুদুর রহমানের ছেলে সজিবুরের দোকানের পেছনের পুকুরের ময়লা আবর্জনা পরিস্কারের কাজে আসে। বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে মশিয়ার হাসানকে দেখে তাকে ধরে নিয়ে বাড়ীতে আটকে রাখার চেষ্টা করে। কারণ, হাসানকে ধরে রাখলে মোস্তফার কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাবে। এসময় হাসান সজিবুরের কাজে এসেছে তাই সজিবুর মশিয়ারকে হাসানকে তার কাজ করা অবস্থায় কিছু বলতে ও ধরে নিয়ে যেতে নিষেধ করে। এ সময় সজিবুর ও মশিয়ারের মধ্য কথাকাটাকাটি শুরু হলে মশিয়ারের বড় ভাই হাবিবুর ও চাচাতো ভাই শুকুর আলী ঘটনাস্থলে এসে সজিবুরকে বেদম মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে স্থানীয়রা সজিবুরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। এ ঘটনায় সজিবুরের পিতা মাসুদুর রহমান বাদি হয়ে দর্শনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মূলত সেই অভিযোগ থেকে রক্ষা পেতে ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গভীর রাতে ডাকাতির নাটক সাজায় মশিয়ার ও হাবিবুরের পিতা রবিউল ইসলাম ও তার মা নূরনাহার। রবিউল ইসলাম রাতের আধারে দুজন ডাকাতকে চিনতে পেরেছেন বলে সাংবাদিকদের জানায়। যদিও রবিউল ইসলামের স্ত্রী নূরনাহার চিনতে পারার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এ নিয়ে ডাকাতির ঘটনাটি ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রিপন লস্কর বলেন, ডাকাতির ঘটনা সঠিক না। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ডাকাতির নাটক সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। স্থানীয় আসাবুল নামের একজন জানান, তারা রাতেই একেক সময় একেক কথা বলছিলো। স্থানীয়রা আরো জানান, ডাকাতদল হলে প্রতিবন্ধীকে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে ছাড়তো না। তবে পুলিশ বলছেন ডাকাতির ঘটনা রহস্যজনক। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।