স্টাফ রিপোর্টার: ‘কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মূলমন্ত্র, শান্তি শৃঙ্খলা সর্বত্র’ এ সেøাগানকে সামনে রেখে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে র্যালি, আলোচনাসভা, রক্তদান কর্মসূচি ও কেক কাটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গায় আয়োজিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গায় একসময় প্রতিদিন লাশ পড়তো। স্থানীয় পত্রিকায় লেখা হতো ‘আজ ছয়টি উইকেট পড়েছে’। অর্থাৎ একজন মানুষ খুন হলে পত্রিকার খবরে লেখা হতো উইকেট পতন। চুয়াডাঙ্গা জেলা সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে। পুলিশ সেদিন যদি বেঁকে বসতো এবং পুলিশ যদি বলতো আমরা এই সন্ত্রাসীদের সামনে যাবো না। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. নাসিমের অক্লান্ত পরিশ্রমে শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ত্রাসমুক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে ১৩ লাখ মানুষ রয়েছে। এক হাজার ২০০ পুলিশের পক্ষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সম্ভব? অপরাধ, মাদক ও অন্যায়কে সমর্থন করবো না, তাহলে পুলিশ পারবে। তা না হলে পুলিশ পারবে না। প্রতি হাজারে একজন পুলিশ। সেজন্য জনতাই পুলিশ, পুলিশই জনতা। মানুষকে সচেতন করতে হবে। পুলিশ বাঙালী ঘরের সন্তান। মহিলা পুলিশও চাকরী করছে। আমাদের সন্তানরা প্রধান বিচারপতি, সচিব, ডিসি ও এসপি হচ্ছে। আমার সন্তানরা বাঙালী পুলিশের সহযোগিতা দরকার। মানুষের সহযোগিতা দরকার। বঙ্গবন্ধু এই জাতির মঙ্গলের কথা ভাবতেন। জাতির মুক্তির কথা ভাবতেন। একহাতে তালি বাজে না। সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাবার স্বপ্ন পূরণে তার যোগ্য মেয়ে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করি। দেশের মানুষের মাথা উঁচু করে বলতে পারি বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। পুলিশিং কমিউনিটি এগিয়ে যাবে। ন্যায় বিচার পাবে। সাধারণ মানুষ যেনো হয়রানির শিকার না হয়।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সদর থানার অফিসার্স মেসে রক্তদান কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিবসটির সূচনা হয়। এরপর বড়বাজার শহীদ হাসান চত্বর থেকে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। উদ্বোধনের পর শহীদ হাসান চত্বর থেকে বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এরপর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডিসি সাহিত্য মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনাসভা, পুরস্কার বিতরণ, কেককাটা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। প্রধান আলোচক হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর বক্তব্য রাখেন। এ সময় খুলনা রেঞ্চের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) বিভাগীয় সমন্বয়ক নিজামুল হক মোল্যা, প্রধান পৃষ্ঠপোষক জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক ও কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর মো. কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। সভায় কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব মো. মনিরুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এ সময় সাংবাদিক শাহ আলম সনি ও নুরুন্নাহার কাকলী বক্তব্য রাখেন। সভার শুরতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন পুলিশ লাইনের ইমাম আব্দুর রহিম ও গীতা পাঠ করেন পুলিশ সদস্য নারায়ন চন্দ্র বর্মন। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাইফ। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় কণ্ঠশিল্পী করবী, পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল বারেক এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পী ও পুলিশ সদস্যরা গান পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) আনিসুজ্জামান, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, কোর্ট ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন, সরকারি কৌসুলি বেলাল হোসেন, জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ সাদাত হোসেন, সাংবাদিক অ্যাড. রফিকুল ইসলাম, পুলিশিং কমিটির সদস্য এবং পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে আলমডাঙ্গা থানা থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে থানা চত্বরে আলোচনাসভায় ওসি সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌর মেয়র আলহাজ হাসান কাদির গনু। প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. খন্দকার সালমুন আহমেদ ডন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজি মারজাহান নিতু, পুলিশ পদির্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আব্দুল আলীম, পুলিশ পরির্দশক (অপারেশন) একরামুল হোসাইন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা, কুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ পিন্টু, খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান তাফসির আহমেদ লাল মল্লিক, কালিদাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ শেখ আশাদুল হক মিকা, ডাউকি ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম, বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল, বণিক সমিতির সভাপতি আরেফিন মিয়া মিলন, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডাক্তার অমল কুমার বিশ্বাস। আলমডাঙ্গা থানার এসআই আমিনুর রহমানের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন বণিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আলাউদ্দিন, খাসকররা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান রুন্নু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের আবু, খাসকরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল গণি, বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী হাফিজ মিয়া, ডাউকি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির আহ্বায়ক ডা. আনিসুর রহমান, পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কালু ঘোষ প্রমুখ।
দর্শনা অফিস জানিয়েছে, দর্শনায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে দর্শনা থানা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালি শেষে থানা চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু। দর্শনা থানার ওসি এএইচএম লুৎফুল কবীরের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা সার্কেলের পুলিশ পরিদর্শক মারুফ হোসেন, কুড়–লগাছি ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, বেগমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলী হোসেন জোয়ার্দ্দার, দর্শনা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমানুল্লাহ আমান, ইন্সপেক্টর (অপরেশন) নিখিল চন্দ্র অধিকারী, দর্শনা পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসলাম আলী তোতা, দর্শনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হানিফ ম-ল, ইকরামুল হক পিপুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মামুন, দর্শনা পৌর প্যানেল মেয়র রেজাউল ইসলাম, সাবেক পৌর কমিশনার জয়নাল আবেদীন নফর, আ.লীগ নেতা বিল্লাল হোসেন, সোলায়মান কবির, নেফাউর রহমান মন্টু, ফয়সাল। দর্শনা থানার সেকেন্ট অফিসার আহম্মদ আলী বিশ্বাসের উপস্থাপনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দর্শনা পৌর কাউন্সিলর এনামুল কবির, বিল্লাল হোসেন, আশুর উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মামুন শাহ, ছাত্রলীগনেতা নাহিদ পারভেজ, রিপন, মিল্লাত, লোমান প্রমুখ।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা মডেল থানার আয়োজনে থানা চত্বর থেকে একটি র্যালি হয়। র্যালি শেষে থানা চত্বরে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি শহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম নুরুন্নবী, জুড়ানপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন, দামুড়হুদা সদর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলী, কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম, নাটুদাহ ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। এসআই তৌহিদুর রহমান শেখের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিদর্শক (অপারেশন) বাবর আলীসহ কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির বিভিন্ন সদস্যবৃন্দ।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে পালিত হয়েছে। গতকাল শনিবার এ উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান। পুলিশিং ডে উপলক্ষে সকালে জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ও থানার ওসি আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে থানা ক্যাম্পাস থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি উপজেলার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানায় গিয়ে শেষ হয়। র্যালি শেষে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। থানার ওসি আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোর্তুজা, পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ঈশা, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, বাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান, সীমান্ত ইউপি চেয়ারম্যান ইশাবুল ইসলাম মিল্টন মোল্লা প্রমুখ।