ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পৌরসভা ও সদর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন পরিষদ ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে মতবিনিময় সভা হয়েছে। গতকাল রোববার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবীব খান। সভায় প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন, ইভিএম নিয়ে মিথ্যাচার, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। মতবিনিময় সভায় সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান অভিযোগ করেন, তার প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র এক প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ভোটারদের নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ওই ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু সাইদ বিশ্বাস পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তিনি নন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি গাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ইভিএম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন। বলে বেড়াচ্ছেন, ইভিএমে ভোট হবে, যেখানে ভোট দেন সব নৌকায় চলে যাবে। কাজেই অন্যদের ভোটে প্রচারণা না করে শুধু নৌকার পক্ষেই ভোটারদের প্রচারণা চালাতে বলছেন। ঝিনাইদহ পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী অভিযোগ করেন, নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি, কর্মীদের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ইন্ধনে তার বাড়িতেও হামলার ঘটনা ঘটছে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভোটের অন্তত ১০ দিন আগে থেকে বিজিবি মোতায়েন ও ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের দাবি জানান। নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেক বলেন, প্রতিপক্ষ যে অভিযোগগুলো দিয়েছে এগুলোর সঙ্গে তার কোনো কর্মী জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। কোনো একটি পক্ষ তার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতেই এমন মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান বলেন, ইভিএমে কারচুপি করার কোনো সুযোগ নেই। যার ভোট তাকেই দিতে হবে। ব্যালটের চেয়ে অধিক নিরাপদ ইভিএম। নির্বাচনে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আচরণবিধি ভঙ্গ করলে প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে। ভোট কেন্দ্র এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার কোনো সুযোগ নেই। যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা। নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, প্রচার প্রচারণায় সব প্রার্থীকে আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। কোনো অভিযোগ থাকলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান তালুকদার, খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী, ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম, পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, মাগুরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অলিউল ইসলাম প্রমুখ। ঝিনাইদহ পৌরসভা, সদর উপজেলার পাগলাকানাই ও সুরাট ইউপি নির্বাচন আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চলছে জোরেশোরে। প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে চলেছেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কিছু করতে দেয়া হবে না।