আফজালুল হক: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ঠা-াজনিত কারণে শিশু রোগী সংখ্যা বাড়ছে। গত ৫ দিনে কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ভাইরাসজনিত কারণে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৫৪ রোগী। এছাড়া বহির্বিভাগেও প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে কয়েকশত শিশু রোগী। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা এসব শিশুর অধিকাংশই শীতজনিত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। বিপুলসংখ্যক রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে নাজিফা খাতুন নামে ৩ মাসের এক শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। নাজিফা খাতুন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সিনেমা হলপাড়ার রোকনের মেয়ে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতে ঠান্ডাজনিত শ্বাসকষ্ট নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে নাজিফাকে। পরদিন সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
এছাড়াও গত পাঁচদিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ৫৪ জন। এর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত চার শিশু। এছাড়া বহির্বিভাগেও প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছে কয়েকশত রোগী। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা এসব শিশুর অধিকাংশই শীতজনিত নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যত শীত বাড়ছে, রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগের পাশাপাশি নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে রোগীরা আসছেন হাসপাতালে। এছাড়াও নাক, কান ও গলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা রোগীর সংখ্যাও কম নয়। প্রতিদিন প্রায় ১৫০টির অধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে শুধুমাত্র বহির্বিভাগেই। শিশুদের ঠা-া থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কম থাকায় জীবাণুমুক্ত বাতাসেই উড়ে বেড়ায়। এই জীবাণু খুব সহজেই শিশুদের আক্রমণ করে। এই জীবাণুর শিশুদের শরীরে প্রবেশ করলে নানা রোগের সৃষ্টি হয়। ঠা-া বাতাস শিশুদের শরীরে লাগতে দেয়া যাবে না, শিশুদের পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরাতে হবে। খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গেলে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ বাড়তে পারে। এই সময় ফুলের রেণু থেকে দূরে থাকতে হবে। ফুলের রেণু অ্যাজমা পরিস্থিতি খারাপ করে। তাদের গরম কাপড় পড়ানোর পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকেও নজর রাখতে হবে। এসব রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের ছয় মাস বয়স পর্যন্ত নিয়মিত বুকের দুধ পান করাতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। শিশুদের জ্বর, অস্বাভাবিক কাশি ও পাতলা পায়খানা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নেয়ার পরামর্শও দেন তিনি।