স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার পদ্মবিলা ইউনিয়নে কুশোডাঙ্গা গ্রামে সড়কে গাছ ফেলে বেরিকেড তৈরি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজনের থেকে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় অপর একটি পাখিভ্যান গতিরোধের চেষ্টা করে এই ডাকাতদল। পাখিভ্যানে থাকা যাত্রীরা ডাকাতদলকে ধাওয়া করে। এ সময় এক ডাকাতকে ধরতে সক্ষম হয়। বাকি সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে জানাজানি হলে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ডাকাতকে গণপিটুনি দেয়া হয়। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত অবস্থায় ডাকাতকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কুশোডাঙ্গা-নিমতলা সড়কের মুড়োতলার মাঠ নামকস্থানে এঘটনা ঘটে। গণপিটুনির শিকার ওই ডাকাতের বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা গ্রামের ফরহাদ হোসেন ছেলে সুমন হোসেন (৩৮)। গতরাত পৌনে ২টার দিকে তার পরিবারের লোকজন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এসে তাকে সনাক্ত করেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
পদ্মবিলা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ড (ইউপি) সদস্য মো. হুমায়ন কবির, অনুমানিক রার ৯টার দিকে মুড়োতলার মাঠে সড়কে একটি গাছ ফেলে বেরিকেড দেয় ৫-৬ জনের একটি ডাকাতদল। তারা কয়েকজনের থেকে ৬-৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে জেনেছি। তিনি আরও বলেন, কুশোডাঙ্গা গ্রামে এক ব্যক্তির জানাজার শেষে ওই সড়ক দিয়ে পানিভ্যানযোগে কয়েকজন বাড়ি ফিরছিলেন। ডাকাতরা পাখিভ্যান গতিরোধ করলে যাত্রীরা বিষয়টি বুঝতে পারে। পরে ডাকাতদের থেকে সংখ্যায় যাত্রীরা বেশি হওয়ায় তাদেরকে ধাওয়া দেয়। পরে একজনকে ধরতে পারলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। মুহূর্তে বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ডাকাতকে গণপিটুনী শুরু করে। পরে সদর থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, সড়কে গাছ দিয়ে বেরিকেড সৃষ্টি করে কয়েকজনের একটি দল ডাকাতির চেষ্টা চালায়। পরে গ্রামবাসীরা একজনকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
কেউ ডাকাতির কবলে পড়েছিলেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যতদূর জেনেছি ডাকাতির কবলে পড়ার সময় তারা চেচামেচি করলে লোকজন চলে আসে। আমাদের অফিসাররা ঘটনাস্থলে আছেন। তারা জানালে তারপর বিস্তারিত বলতে পারবো।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক ডা. মুস্তাফিজুর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, গতকাল রাতে আহত অবস্থায় পুলিশ একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হতে পারে।
এদিকে, গতরাত পৌনে ২টার দিকে আহত ওই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের ফরহাত হোসেনের ছেলে সুমন হোসেন। রাতে খবর পেয়ে মা, ভাই ও স্ত্রীসহ কয়েকজন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এসে সুমনকে সনাক্ত করে।
সুমনের নাম সাবিনা খাতুন জানান, সুমন মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কে বা কারা মোবাইলফোনে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর থেকে সুমনের কোনো খোঁজ ছিলো না। রাতে জানতে পারি আহত অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে আমরা ছুটে এসেছি।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে, ওই ডাকারতর শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় রক্তের প্রয়োজন হয় বলে জানা গেছে। রাতেই কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের উদ্যোগে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়সহ রক্ত জোগাড়ের চেষ্টা চলছিলো।