স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা হারদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবার দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছ। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের পাঁচজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ধারালো অস্ত্রের কোপে জখম তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনার ১২ ঘন্টা না পেরোতেই গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে আবারও এই ঘটনা ঘটে। শনিবার সারাদিন দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় দু’পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
এলাকাসূত্রে জানা গেছে, হারদী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার শেখ শাহনুর টিপু এবারও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী সম্ভাব্য প্রার্থী মহিনুল ইসলাম। গত শুক্রবার রাতে একটি চায়ের দোকানে এক পক্ষের সমর্থকরা অন্যপক্ষের সমর্থকদের মারধর করে। এ ঘটনার জের ধরে গতকাল শনিবার সকালে মহিনুল ইসলামের কিছু সমর্থক হারদী বাজারে গিয়ে শেখ শাহনুর টিপুর সমর্থকের ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পুরো এলাকাজুড়ে থমথমে আবস্থা বিরাজ করছে।
জখম তিনজন হলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী গ্রামের সেলিম শেখের ছেলে পাপ্পু শেখ (২৪), একই এলাকার মৃত মুক্ত শেখের ছেলে রবেল শেখ (৩২) ও শামিম খানের ছেলে মিন্টু খান (২৫)। তবে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ এঘটনায় উভয়পক্ষের মোট পাচজন আহতের ঘটনা জানালেও বাকি দুজনের তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রার্থী শেখ শাহনুর বলেন, আমার ২নং ওয়ার্ডের অপর প্রার্থী মঈনুল ইসমালের ছোট ছেলে রাজিব শেখ ও তার সমর্থকরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে আমার তিনজন কর্মীকে জখম করেছে। এ ঘটনায় আমি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আলমডাঙ্গা থানায় এসেছি। এদিকে অভিযুক্ত প্রার্থী মঈনুল ইসলামের মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, শনিবার সকালে তিনজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্থানীয়রা। তাদের শরীরে দেশীয় অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। একজনের হাত ভেঙে গেছে ও একজনের মাথা ফেটে গেছে। তবে তাদের অবস্থা শঙ্কাঙুক্ত।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের পাঁচজন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে নেয়। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ নভেম্বর আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদীসহ ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ৪ নভেম্বর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। ১৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬৩ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থী ১৪২জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৪৮ জন অংশগ্রহণ করছেন। মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শেষে খাদিমপুর ও গাংনী ইউনিয়নের দুজন সদস্য প্রার্থী সাজাপ্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে তাদের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। আগামী ১২ নভেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্যদিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করবেন প্রার্থীরা।