দুই বাসের পাল্লাপাল্লীতে প্রাণ গেলো সুপারভাইজারের : আহত ৯

চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জে রয়েল এক্সপ্রেসকে ওভারটেক করতে গিয়ে পুর্বাশা পরিবহন খাদে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী পুর্বাশা পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৮ যাত্রী। এছাড়া উদ্ধার কাজের সময় চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এক কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় পুর্বাশা পরিবহনের (এসি) (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৫২৪২) বাসটি। চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বদরগঞ্জবাজার এলাকায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে উল্টে পড়ে যায়।

নিহত সুপারভাইজার সাগর আলী চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার ইসলামপাড়ার তাহসান ইসলামের ছেলে। আহতরা হলেন, দর্শনার পুরাতন বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলীর ছেলে নাহি ফেরদৌস ওরফে রনি (৪০), আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের গুপীনগর গ্রামের ম-লপাড়ার নূর ইসলামের ছেলে আল আমিন (২৪), দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের পোতালপাড়া গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে শাহাবুল হক (৬০), একই উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের শেখপাড়ার ফরজ আলীর ছেলে মিরাজ আলী (২৫), বৈদ্যনাথপুর গ্রামের দিদার হোসেনের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৩), চুয়াডাঙ্গা শহরের কোর্টপাড়ার আকসেদ আলীর ছেলে পিনা ইসলাম (৫০), শহরের সুমিরদিয়া এলাকার শাহাদাৎ হোসেনের স্ত্রী মেহেরুন নেছা (৪০) ও ঢাকা মোহাম্মদপুর এলাকার মুহাসিন তালুকদারের ছেলে তাকি তালুকদার (২৫)। এছাড়া বাসের জানালা কেটে উদ্ধারকাজের সময় হুসেন আলী নামে এক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আহত হয়েছেন।

বাসের যাত্রী মিরাজ আলী দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, বাসটির গতি বেশি ছিলো না। চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্ত পার হয়েই সামনে রয়েল এক্সপ্রেস যাত্রীবাহী বাসটির ওভারটেক করতে যান চালক। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদের মধ্যে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই সুপারভাইজার নিহত হয়।

গোলাম রসুল নামে পুর্বাশা পরিবহনের যাত্রী জানান, রাত সোয়া ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয় বাসটি। ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে তাদের গাড়িটি সামনের রয়েল এক্সপ্রেস বাসটি অতিক্রম করতে যাওয়ার সময় চালক গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় গাড়িটি কয়েক পাল্টি খেয়ে খাদে পড়ে যায়। এরপর গাড়ির ভিতর থেকে বের হবো জানালা দরজা কিছুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে জানালা কেটে সবাইকে উদ্ধার করে।

পিনা নামের আরেক যাত্রী দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, আমরা ১৬-১৮জন যাত্রী ছিলাম। আনুমানিক ৬০ কিলোমিটার গতিতে পুর্বাশা পরিবহন চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। ঝিনাইদহ সদরের বোরাই নামকস্থানে পৌঁছুলে রয়েল এক্সপ্রেস বাসের ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। সুপারভাইজার ঘটনাস্থলে নিহত হলেও বাকি যাত্রীরা প্রাণ রক্ষা পেয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসের জানালা কেটে আমাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এসময় বাসের জানালা কেটে আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। নিহত সুপারভাইজার সাগরের মরদেহ ঝিনাইদহ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া উদ্ধারকাজের সময় আমাদের একজন কর্মী আহত হয়েছে। তাকে সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, বাস দুর্ঘটনায় আহত নয়জনের মধ্যে নাহিদ ফেরদৌসকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ সোহেল রানাকে একাধিক কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Comments (0)
Add Comment