স্টাফ রিপোর্টার: এক মোটরসাইকেলে উঠেছিলো চার কিশোর। তাদের মধ্যে আরোহী তিনজন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়–য়া। চালক ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলো সে। তারা জয়রামপুর শেখপাড়া থেকে ওঠার পর কাঁঠালতলায় পৌঁছে ঘটে বিপত্তি। সামনে পণ্যবাহী চলন্ত ট্রাক আর কাঠভর্তি ভ্যান দেখে মোটরসাইকেলের গতি কমিয়ে দেয়। তাতেও হয়নি শেষ রক্ষা। কাঠভর্তি ভ্যানকে পাশ কাটাতে যেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়তে হয় চলন্ত ট্রাকের সামনে। ঘটে মোটরসাইকেল-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ। এতে চারজনই ছিটকে পড়লে এক কিশোর নিহত হয়। অপর তিন কিশোর আহত হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গতকাল বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর মহাসড়কের জয়রামপুর কাঁঠালতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরের নাম সুমন আলী (১১)। সে জয়রামপুর শেখপাড়ার বাবলু হোসেনের ছেলে। আহত তিনজন হলো একই গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে তামিম ইকবাল (১১), সাইফুল ইসলামের ছেলে রাশেদুল ওরফে ফখরুদ্দিন (১২) ও আরিফুল ইসলামের ছেলে ইমন আলী (১১)। হতাহতদের মধ্যে রাশেদুল জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র এবং অপর তিনজন জয়রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। রাশেদুল ও তামিমকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইমন আলীর আঘাত গুরুতর না হওয়ায় সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রাশেদুল বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলো এবং পেছনের থাকা তিনজন হইহুল্লোড় করছিলো। বেলা পৌনে তিনটার দিকে জয়রামপুর কাঁঠালতলা এলাকায় পৌঁছুলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চারজনই মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে।
খবর পেয়ে দর্শনা থেকে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আহত কিশোরদের উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তাদের মধ্যে ইমনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়। বাকি তিনজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমন আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়া মা-আরিজ জানান, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুমনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আহত তামিম ও ফখরুদ্দিন শঙ্কামুক্ত নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী রেফার করা হয়েছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, ট্রাক নিয়ে চালক পালিয়ে গেছেন। কাঁঠালতলা এলাকায় একটি পাকিভ্যানকে পাশ কাটাতে গেলে ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বলে আহত ইমন জানায়।
স্থানীয় সচেতনমহল প্রশ্ন তুলে বলেছেন, অভিভাবকরা আর কতো ভুল করবে? এভাবে একটা স্কুলপড়–য়া ছেলের কাছে মোটরসাইকেল ছেড়ে দেয়া কতোটা যুক্তিযুক্ত? আর এ মৃত্যুর জন্য দায়ী কে?