জীবননগর ব্যুরো/মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জে ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে চালক ও জীবননগরের পার্শ্ববর্তী কানাইডাঙ্গা গ্রামে দর্শনা ডিলাক্স পরিবহনের বাসের ধাক্কায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মুন্সিগঞ্জের পশুহাট এলাকায় এবং বুধবার সন্ধ্যায় মহেশপুর উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের মাঠপাড়ার মৃত মাদার আলীর ছেলে ট্রাক্টর চালক রাশিদুল ইসলাম ও মহেশপুর উপজেলার নিমতলা গ্রামের মৃত ইদু বিশ্বাসের ছেলে ইয়াকুব বিশ্বাস।
জানা গেছে, দর্শনা ডিলাক্স পরিবহনের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন বাইসাইকেল আরোহী ইয়াকুব বিশ্বাস (৬৫)। জীবননগরের পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার নিমতলা গ্রামের ইয়াকুব বিশ্বাস গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ী থেকে বাইসাইকেলযোগে শ্বশুরবাড়ি জীবননগর উপজেলার বকুন্ডিয়া গ্রামে যাচ্ছিলেন। তিনি কানাইডাঙ্গা নামক স্থানে পৌঁছুলে একই দিক হতে আসা দর্শনা ডিলাক্স পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস পেছন দিক থেকে তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়। বাইসাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তার ওপর পড়ে যান ইয়াকুব বিশ্বাস। এতে তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগে। এ সময় স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াকুব বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জীবননগর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম।
অপরদিকে, আলমডাঙ্গার বলেশ্বরপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিনের পুকুর থেকে ট্রাক্টরে মাটি বোঝাই করে মুন্সিগঞ্জের একটি ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছিলেন ট্রাক্টর চালক রাশিদুল ইসলাম (২৪)। ভোর ৪টার দিকে দিকে মুন্সিগঞ্জ পশুহাটের ভাইবোন স্টোরের সামনে পৌঁছুলে ট্রাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা লাগে। এতে চালক রাশিদুল ছিটকে ট্রাক্টরের চাকার নিচে পড়ে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাজারের নাইটগার্ড ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ৯৯৯ এ ফোন করেন। সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য এবং মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ এসআই আসের আলী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে চালকের লাশ উদ্ধার করে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাক্টর চালানোর সময় ঘুমিয়ে পড়ায় ওই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের আইসি আছের আলী বলেন, রাতেই ফায়ার সার্ভিস ও মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশের যৌথ চেষ্টায় ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত ট্রাক্টর চালক রাশিদুলের মরদেহ মুন্সিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়। কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সকালে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, রাতদিন প্রতিনিয়ত সড়কে দ্রুতগতির নিয়ন্ত্রণহীন মাটি বোঝাই ট্রাক্টর চলাচল করে। দ্রুতগতিতে চলাচলের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় জনসাধারণের। এছাড়াও ট্রলির মাটি পড়ে যেমন সড়ক নষ্ট হচ্ছে তেমনই সামান্য বৃষ্টি বা পানির ছোঁয়া পেলেই রাস্তা কর্দমাক্ত হয়ে যায়।