জমে উঠেছে আলমডাঙ্গার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউপি নির্বাচন

প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা : দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি

আলম আশরাফ: জমে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ও আইলহাঁস ইউপি নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে গ্রামে অলিগলি। চায়ের টেবিলে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। আগামী ১৬ মার্চের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে ইউনিয়ন দুটিতে বইছে নির্বাচনী আমেজ। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রার্থীরা জোরেশোরে নেমে পড়েছেন প্রচার প্রচারণায়। প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী এলাকা। ছুটছেন বাড়ি বাড়ি। মডেল ইউনিয়ন, রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। তবে ভোটাররা প্রতিশ্রুতি চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতাকে যাচাই করে ভোট দেয়ার কথা ভাবছেন। জয়ের ব্যাপারে সবাই আশাবাদী হলেও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে কেউ কেউ প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। ভোটগ্রহণ করা হবে ইভিএম’র মাধ্যমে।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রার্থীরা দলবেঁধে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তাদের। এছাড়াও অটোরিকশা, ইজিবাইক, নসিমন ও রিকশায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। ইউনিয়নগুলোর প্রতিটি এলাকার অলিগলি, দোকানের সামনে, ফাঁকা জায়গায় প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। চায়ের স্টল, হোটেলসহ সব জায়গাতেই এখন চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা আর জল্পনা-কল্পনা। কে হচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেম্বার। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই প্রার্থীরা খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে দিন-রাত সময় দিচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অন্যান্য প্রার্থীরাও বলেন জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তাই জনগণ নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয় করবেন এ কামনা করছেন তারা।

এদিকে নারী প্রার্থীদের সাথে মাঠে নেমেছেন স্বামী সন্তানরাও। তেমনি পুরুষ প্রার্থীদের সাথেও স্ত্রী-সন্তানরা বসে নেই। সবার আশা ভোট যুদ্ধে জিততেই হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার ব্যাপারে কোনও প্রার্থীকেই নিরাস করছেন না। প্রার্থীরা ব্যবসায়ী ভোটারদের দোকানে গিয়েও ভোট প্রার্থনা করছেন। শুধু তাই নয় মাঠে কর্মরত শ্রমিকদের কাছেও যাচ্ছেন ভোটের আশায়। দিচ্ছেন নানা ধরণের প্রতিশ্রুতি।

এদিকে প্রার্থীদের নিয়ে তার কর্মীসমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলাচ্ছে জোর নির্বাচনী প্রচারণা। সাবেক, বর্তমান ও নতুন প্রার্থীরা সবাই উন্নয়নের অঙ্গীকার করে যাচ্ছেন। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপও। ভোটাররা বলছেন, ‘আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো। এবার নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় তাহলে তারা যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবেন।’ প্রার্থীরাও বলছেন, ‘তারা জনগণের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভোট প্রার্থনা করছেন। ভোটাররাও তাদের বিজয়ী করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয়ের বিষয়ে তারা শতভাগ আশাবাদী।’

আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৯টি। মোট ভোটার ১২ হাজার ৪৫৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৩১০ জন এবং মহিলা ভোটার ৬ হাজার ১৪৮ জন। নাগদাহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৯টি। মোট ভোটার ১৩ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ৭৮১ জন এবং মহিলা ভোটার ৬ হাজার ৫৬৭ জন। দুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে  নগদাহ ইউনিয়ন ৯জন প্রার্থী ও আইলহাস ইাউনিয়নে ৩ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও ইউনিয়ন দুটিতে সংরক্ষিত আসনের মহিলা ২৩ জন ও সাধারণ সদস্য ৫১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগদাহ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারমান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২ জন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত ভেদামারি গ্রামের হায়াত আলী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাগদাহ গ্রামের মোহাম্মদ এজাজ ইমতিয়াজ জোয়ার্দ্দার বিপুল (চশমা), খেজুরতলা গ্রামের দারুস সালাম (মোটরসাইকেল), ভেদামারি গ্রামের প্রভাষক আবুল হোসেন (টেবিলফ্যান), নাগদাহ পূর্বপাড়ার গ্রামের আলমগীর হোসেন (রজনীগন্ধা), জোড়গাছা গ্রামের মিশর আলী (টেলিফোন), একই গ্রামের হাবিবুল্লাহ (আনারস), বলিয়ারপুর গ্রামের আতিকুর রহমান (ঘোড়া) ও জাহাপুর গ্রামের আওয়ালুজ্জামান রাসেল (আটোরিক্সা) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে, আইলহাস ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩ চেয়ারমান প্রার্থী। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত টাকপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বাদল (নৌকা), বলেশ^রপুর গ্রামের মিনাজ উদ্দিন বিশ্বাস (চশমা), স্বতন্ত্র ঘোলদাড়ী গ্রামের মোহাম্মদ বিল্লাল গনি (আনারস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এই দুটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা ২৩ জন ও সাধারণ সদস্য ৫১ প্রার্থী  প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comments (0)
Add Comment