স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশেই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। গত রোববার থেকে বন্ধ রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রলায় থেকে বলা হয়েছে পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকা বন্ধ রাখতে হবে। একসূত্র বলেছে, ভ্যাকসিন না থাকার কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অপরদিকে সোমবার চুয়াডাঙ্গায় আরও ১ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের কোভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছে। শনাক্তকৃত ব্যাক্তির বাড়ি দর্শনায়।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ সোমবার নতুন ২৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছে। এ দিন পূর্বের ২৭ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। একজন কোভিড-১৯ পজিটিভ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯শ ৯৯ জন। এদিন আরও ১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ১ হাজার ৬শ ৯৮ জন। জেলায় বর্তমানে মোট সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১০৪ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৭১ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৮ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১৪ জন, জীবননগর উপজেলার ১১ জন। সক্রিয় ১০৪ জনের মধ্যে হাসপাতালে ১০ জন, রেফার রয়েছেন ৫ জন ও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮০ জন। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৭ হাজার ৮শ ৭১ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলার ১০ হাজার ৬শ ৪৯ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ২৭ হাজার ৮শ ৮২ জন, দামুড়হুদা উপজেলার ১২ হাজার ৪শ ৩৩ জন, জীবননগর উপজেলার ৬শ হাজার ৯শ ৮ জন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন জেলার মোট ১৭ হাজার ৯শ ৬৪ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৬ হাজার ৩শ ২৭ জন, আলমডাঙ্গা উপজেলার ৪ হাজার ৭শ ৫৪ জন, দামড়হুদা উপজেলার ৩ হাজার ৯শ ৭৯ জ ন, জীবননগর উপজেলার ২ হাজার ৯ শ ৪ জন।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ১৯৯৯ জনের মধ্যে সদর উপজেলারই ৯শ ৮৭ জন। অথচ টিকা গ্রহণে সদর উপজেলা অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। আলমডাঙ্গা জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ৩৫২ জন সেখানে টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা ২৭ হাডজার ৮শ ৮২ জন। সদর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও টিকা গ্রহণে পিছিয়ে কেনো? জবাব নেই। গত ৭ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। সোমবার থেকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া বন্ধ রয়েছে। তবে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া চলছে। এ অবস্থায় ভারত থেকে তাড়াতাড়ি টিকা পাওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন স্বয়ং স্বাস্থ্য মন্ত্রী। অপরদিকে ভাইরাস সংক্রমণ দ্রুত ছড়াচ্ছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের অবস্থা বেশামাল। চুয়াডাঙ্গায় সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমলেও স্বাস্থ্য বিধি না মানলে গণহারে ছড়াতে পারে কোভিড-১৯। ফলে সকলকে মাস্ক পরে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য পুনঃ পুনঃ অনুরোধ জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক তথা জেলার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেছেন, করোনা ভাইরাসকে কোনভাবেই তুচ্ছ ভাবার কারণ নেই। একের পর প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এই ভয়ানক ভাইরাস। ফলে আমাদের সকলকেই নিজ নিজ অবস্থানে নিজের এবং সমাজের স্বার্থে দায়িত্বশীল হওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত: দেশে রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭শ ৮৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৩শ ৬ জন। এ পর্যন্ত মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৩ লাখ ৭১ হাজার ২শ ২৮ জনের নমুনা। মোট শানাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬শ ২৮ জন। সুস্থ হয়েছেন সোমবারের ৪ হাজার ২শ ৪১ জন নিয়ে মোট ৬ লাখ ৬১ হাজার ৬শ ৯৩ জন। সোমবার ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৯৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ১১ হাজার ১শ ৫০ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার ৫৭ জন।