স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের বেশির ভাগ পাকা সড়ক এখন কাদামাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। গত ৪/৫ মাস ধরে ইটভাটায় মাটি নেয়ার সময়ে সড়কে যে মাটি পড়েছে সেগুলো বৃষ্টিতে ভিজে পিচ্ছিল হয়ে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে যানবাহনের চালক, যাত্রী ও সাধারণ মানুষের জন্য। বেশির ভাগ সড়কের চিত্র এখন এমনই। ইটভাটার মাটি দীর্ঘদিন ধরে ট্রাকে পরিবহন করায় তা পড়ে বেহাল হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। সামান্য বৃষ্টিতে সেই মাটি কাদাময় হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পিচ্ছিল সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। ইটভাটার মালিকেরা জনদুর্ভোগকে পাত্তা না দিয়ে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পাঁচমাইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা সদরে নয়মাইল এলাকায় ইটভাটায় মাটি ট্রাক্টরে ত্রিপল ছাড়াই মাটি আনা নেয়া করায় কাদামাটি পাকা রাস্তায় পড়ে বৃষ্টিতে পিচল হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নজরে পড়ে প্রশাসনের। গতকাল সোমবার দুপরের দিকে চুয়াডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজহারুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভাটা মালিকদের শ্রমিক দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করান। এ সময় মাজহারুল ইসলাম ভাটা মালিকদেরকে সর্তক করে দেন। কোন রকমের ট্রাক্টরের মাটি রাস্তায় পড়তে দেয়া যাবে না। যদি পুনরায় এমন কাঁদায় পরিণিত হয় তাহলে আইনের মাধ্যম দিয়ে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে বলে তিনি উল্লেখ্য বলেন। রাস্তা পরিস্কার করার সময় উপস্থিত ছিলেন কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী আহম্মদ হাসানুজ্জামান মানিক। চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিক জানান, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের জন্য কান্না, তাই রাস্তায় কোনো কাঁদা করে মাটি আনা নেয়া করা যাবে না। আপনারা সবাই সচেতন হন, বিভিন্ন দিক নিদ্যেশনা দেন ভাটামালিকদেরকে।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পড়া ইট ভাটার মাটি পরিষ্কার করা হয়েছে। রোববার, সোমবার পৃথক পৃথকভাবে দামুড়হুদা উপজেলার চুয়াডাঙ্গা-দামুড়হুদা সড়ক, দামুড়হুদা-দর্শনা সড়ক, দামুড়হুদা-কার্পাসডাঙ্গা সড়কে পড়ে থাকা মাটি পরিষ্কার করা হয়। সড়কে পড়ে থাকা মাটি পরিষ্কারের বিষয়ে স্থানীয় বলেছেন অধিকাংশ ইট ভাটা মালিক পক্ষ অনেকটা দায়সারাভাবে মাটি পরিষ্কার করছেন। যার ফলে সড়কের মাটির একটি অংশ সড়কেই লেগে থাকছে। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সড়কে অবস্থিত দেশ ইট ভাটার পরিচালক হাজি আব্দুল কাদের বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মেনেই সড়ক পরিষ্কার করা হয়েছে। দামুড়হুদার মোক্তারপুরস্থ রেড ভাটার পরিচালক সামসুল মিয়া বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়কের মাটি পরিষ্কার করার নির্দেশনা দেয়া হলে সড়কে পড়ে থাকা মাটি পরিষ্কার করেছি। দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস বলেন, ইট ভাটার ট্রাক্টরের মাটি পড়ে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে ইটভাটা মালিকদের সাথে মিটিং করা হয়েছে। এবং কঠোরভাবে ইট ভাটা মালিকদের কে সড়কের মাটি পরিষ্কার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঠিক মতো তারা নির্দেশনা পালন না করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডাকবাংলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহের সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে কয়েক বছর আগে মহাসড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। কিন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দু’পাশের ড্র্রেন সংযোগ রাস্তায় এসে কাজটি অসমাপ্ত রেখে দেই। যার কারনে দুই পাশের ময়লা পচাপানি সংযোগ রাস্তায় পড়ে সারা বছর কাদা হয়ে থাকে। অথচ রাস্তা দেখার কাজে সরকার যাদের নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন তারা এ বিষয় কোন খোজ খবর রাখে না। এই রাস্তা হয়ে দু,টি মসজিদের মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ পড়তে মসজিদে যাই, দু.টি গোরস্তান রয়েছে সেই পচা যুক্ত পানি কাদা মাড়িয়ে যেতে হয়। অনেক সময় নামাজিদের ওজু নষ্ট হয়ে যাই পচা ময়লা পানির কারনে। তা ছাড়া পথচারীরা প্রতিনিয়ত দুর্ভগের শিকার হতে হয়।
এদিকে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আনাম জানান সকালে যখন ফজরের নামাজ পড়তে নামাজিরা মসজিদে আসে তখন তাদের এই কাদাপচা, দুর্গন্ধ ও ময়লা পানির কারনে ব্যপক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আশা করবো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে এর উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যদিকে দোকান মালিক সমিতির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান জানান, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও সকল পথচারীদরে জন্য বিষয়টি অত্যান্ত কষ্টদায়ক। আমি মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট বিনয়ের সাথে আবেদন জানাচ্ছি রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হোক। সাধুহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজি নাজির উদ্দীন জানান, যখন মহাসড়কের পাশে ড্রেন নির্মান করা হয়েছে তখন ঠিকাদার রাস্তার সংযোগ বাদ রেখে যেন-তেন ভাবে দু, ড্রেনের মুখ খুলে রেখেছে যার ফলে দুই পাশে ড্রেন দিয়ে পচাপানি এসে পড়ছে রাস্তায়, আমি ও গোরস্তানে জানাজা নামাজে যাওয়ার সময় দেখেছি খুবই বাজে অবস্থা। আশা করবো কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্তা গ্রহণ করবেন।