স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার আদালত চত্বর থেকে ডাকাতি মামলার আসামি আজিজুল শেখ (২৮) পালিয়ে গেছেন। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে আসামিকে কারাগার থেকে আদালত চত্বরে এনে গাড়ি থেকে নামানোর পরপরই তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। ঘটনার পর থেকেই তাকে আটক করার জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল-মামুন রোববার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করে নেয়া তিন পুলিশ সদস্য হলেন সহকারী শহর উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মো. আনোয়ার হোসেন, কনস্টেবল মো. মিলন হোসেন ও মোছা. বেনজির নাহার। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক। সদস্য হিসেবে আছেন জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ডিবি) আলমগীর কবীর ও রিজার্ভ অফিসের পরিদর্শক আব্দুল বারেক। রোববার সকাল ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আদালত চত্বরে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্য থেকে হাতকড়া খুলে পালিয়ে যান আজিজুল শেখ নামের এক ব্যক্তি। তিনি দামুড়হুদা থানার একটি ডাকাতি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পালিয়ে যাওয়া আজিজুলকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা জজকোর্টের আইনজীবী ও পালিয়ে যাওয়া আসামির আইনজীবী সাজ্জাদ হোসেন রকি জানান, চুয়াডাঙ্গার দর্শনার একটি ডাকাতি মামলার আসামি হিসেবে আজিজুল ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে তিনি আটক ছিলেন। রোববার ছিলো ওই মামলার ধার্য তারিখ। তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে অন্য আসামিদের সাথে আদালত এলাকায় নিয়ে আসা হয়। আদালত চত্বরে কারাগারের গাড়ি থেকে নামার পরপরই তিনি কৌশলে হাতের হ্যান্ডকাপ থেকে নিজের হাত বের করে পালিয়ে যান।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রোববার মামলার ধার্য তারিখে ওই আসামিকে জেলা কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে আদালতে আনা হয়। ভ্যানটি আদালত চত্বরে পৌঁছুলে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। তাকে আটক করার জন্য পুলিশের একাধিক টিম অভিযান শুরু করেছে।
জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট রাতে দর্শনার ঘুঘুডাঙ্গার তক্কেল আলী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় অজ্ঞাত ১০-১২ জন ডাকাতকে আসামি করে দামুড়হুদা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা তদন্ত শেষে এসআই মনিরুল ইসলাম আসামি আজিজুল শেখকে ৬নং আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন এবং অভিযোগপত্রটি গৃহীত হয়। গতকাল রোববার ওই মামলার আসামি আজিজুল শেখের আইনজীবী সাজ্জাদ হোসেন রকি আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেন এবং আসামিকে জেলা কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হলে প্রিজনভ্যান থেকে নামার পরপরই কৌশলে তিনি পালিয়ে যান।
আসামি আজিজুল শেখ গোপালগঞ্জ জেলার মকছেদপুর থানার জলিরপুর গ্রামের ফজল শেখের ছেলে। তার বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের কালিহাতি থানা ও চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানায় ডাকাতি মামলা রয়েছে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে বন্দি ছিলেন আজিজুল।