স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসের নতুন কোনো রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে কুষ্টিয়ার পিসিআর ল্যাবে মোট ২৮২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে কুষ্টিয়া ১৯৬, মেহেরপুরে ৪৪ ও ঝিনাইদহে ৪২। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ৩৬, ঝিনাইদহ জেলায় ৮ জন ও মেহেরপুর জেলায় ২ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় নতুন কোনো রিপোর্ট আসেনি।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় আরও দুজন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন। এরা হচ্ছেন, গাংনী বাসস্ট্যান্ডপাড়ার একজন অপরজন কোদালকাটি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়েল এক শিক্ষিকা। এ নিয়ে গাংনী উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৪ জনে আর জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ জন। জেলার ৩ উপজেলা থেকে সংগ্রহ করা ৪৪টি নমুনা পরীক্ষায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পূর্ব ২৪ ঘন্টায় এ দুইজন কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে জানান সিভিল সার্জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গাংনী বাসস্ট্যান্ডপাড়ার আক্রান্ত ওই ব্যক্তি কয়েকদিন আগে আক্রান্ত বাদিয়াপাড়া গ্রামের পালিয়ে যাওয়া একজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। বাদিয়াপাড়া গ্রামের ওই ব্যক্তির থেকে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তার শরীরে কোনো উপসর্গ নেই বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে, কোদালকাটি গ্রামের ওই স্কুল শিক্ষিকা কার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও অফিসের কাজে মাঝে মাঝে তিনি গাংনী উপজেলা পরিষদের মধ্যে শিক্ষা অফিসে আসা যাওয়া করেছেন। এই যাওয়া আসার মধ্য দিয়ে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন তার পরিবারের লোকজন। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম রিয়াজুল আলম বলেন, আক্রান্ত দুজনই সুস্থ আছেন। তাদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া ও বাড়িতে রুম আইসোলেশন করা হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহে একদিনে নতুন করে ৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৭ জন। বৃহস্পতিবার সকালে নিশ্চিত নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম। তিনি জানান, ঝিনাইদহে বৃহস্পতিবার যশোর ল্যাব থেকে ২৮ টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে। এতে মোট ৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে ঝিনাইদহ সদরে ৭ জন ও কালীগঞ্জে দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, এ নিয়ে ঝিনাইদহ জেলায় মোট ১৫৭ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৪ জন। ঝিনাইদহ জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন দুইজন।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুষ্টিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভয়াবহ আকারে বাড়ছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন। বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে কুষ্টিয়ার ১৯৬ টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ৩৬ জনের নমুনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলায় ১৬ জন, কুমারখালী উপজেলায় ৮ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় ৮ জন, মিরপুর উপজেলায় ১ জন, দৌলতপুর উপজেলায় ৩ জন ও খোকসা উপজেলায় ২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলায় ৮ জন ও মেহেরপুর জেলায় ২ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। খোকসা উপজেলায় টেস্টে পজিটিভ হওয়া ২ জনের ঠিকানা পাংশা, রাজবাড়ী। বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ৷ কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১৬ জনের ঠিকানা থানাপাড়া ১ জন, কোর্টপাড়া ১ জন, জুগিয়া মংগলপাড়া ১ জন, হাউজিং বি ব্লক ১ জন, কুমারগাড়া কালীমন্দির লেন ১ জন, কাস্টম মোড় ১ জন, বিআরবি ১ জন, বড় আইলচাড়া ১ জন, মিনি মার্কেট পশ্চিমপাড়া (ফুলতলা) ১ জন, জুগিয়া বিএলটিসি পাড়া ১ জন, জগতি পোস্ট অফিসপাড়া ১ জন, মংগলবাড়িয়া বাজার ১ জন, আব্দুল আজিজ সড়ক আড়ুয়াপাড়া ১ জন, বিআরবি টাওয়ার উপজেলা মোড় ১ জন ও আড়ুয়াপাড়া ২ জন। কুমারখালী উপজেলায় আক্রান্ত ৮ জনের ঠিকানা বাড়াদি (কয়া) ১ জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ জন, সুলতানপুর ১ জন, কুমারখালী পৌরসভা ১ জন, শেরকান্দি (কুমারখালী পৌরসভা) ৩ জন ও কুন্ডুপাড়া (কুমারখালী পৌরসভা) ১ জন। ভেড়ামারা উপজেলায় আক্রান্ত ৮ জনের ঠিকানা কুন্ডুপাড়া ২ জন, ১৬ দাগ ২ জন, নওদাপাড়া ২ জন, ধুবাইল ১ জন ও মাধবপুর ১ জন। মিরপুর উপজেলায় আক্রান্ত জনের ঠিকানা খেজুরতলা। দৌলতপুর উপজেলায় আক্রান্ত ৩ জনের ঠিকানা ওয়ালটন শো-রুম ১ জন, গংগারামপুর ১ জন ও জয়রামপুর ১ জন।