চুয়াডাঙ্গায় মেডিকেলের ছাত্রসহ আরও ৮ জনের করোনা শনাক্ত

উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া বড়শলুয়ার জাহিদুল ইসলামের শরীরে করোনার উপস্থিতি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা, মেডিকেল কলেজের ছাত্রসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া সদর উপজেলার যুবক বড়শলুয়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের এ ব্যক্তির নামও রয়েছে। এ নিয়ে জেলায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলো ১৮ জনের। গতকাল বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা.এএসএম মারুফ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের ৩জন, বড়শলুয়ার ১জন ও জেলা অ্যাকাউন্ড অফিসার এবং দামুড়হুদা উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের ১জন ও আলমডাঙ্গার ২জন। এদের মধ্যে ১জন নারী ও ৭জন পুরুষ। প্রাপ্ত প্রতিবেদনের মধ্যে দুপুরে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার থেকে এসেছে ২টি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে এসেছে ৫টি ও বিকেলে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে এসেছে ১টি। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া সদর উপজেলার বড়শলুয়া গ্রামের যুবক জাহিদুল ইসলামের শরীরে করোনাভাইরাসে অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এ পর্যন্ত যতোগুলো নমুনা সংগ্রহ করেছে তার মধ্যে মোট শনাক্ত হয়েছেন ১৭ জন।

জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার জানান, ওই ডরমিটরিতে বসবাসকারী চারজন সহকারী কমিশনারকে সেখানে থেকে ‘হোম অফিস’ করতে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহকারী কমিশনার জানান, চলমান পরিস্থিতিতে আতঙ্ক দূর করতে ওই ডরমিটরিতে বসবাসকারী সবাই স্বেচ্ছায় নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ মার্চ আলমডাঙ্গায় ইতালি ফেরত এক যুবক প্রথম করোনা পজেটিভ বলে শনাক্ত হন। সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা শেষে ৩১ মার্চ সুস্থ হয়ে তিনি বাড়িতে ফেরেন। বাকি নয়জনের মধ্যে তিনজন হাসপাতাল আইসোলেশনে ও ছয়জন হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। আজ নতুন শনাক্ত সাতজনের মধ্যে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে নেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া বাকি ছয়জনকে হোম আইসোলেশনে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে তাদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। সিভিল সার্জন ডা. এএসএম মারুফ হাসান মাথাভাঙ্গাকে জানান, নতুন করে আক্রান্ত সাতজনের মধ্যে মেডিকেল কলেজের একজন ছাত্রসহ পাঁচজনই ঢাকা থেকে সম্প্রতি এলাকায় ফিরেছেন। তাদের পরিবারের সদস্যদেরও নমুনা পরীক্ষা করা হবে।

এদিকে, বর্তমানে ভাইরাস সংক্রমিত অন্যান্য জেলা বিশেষ করে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ২৬৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে, ১৩ জনকে হোম আইসোলেশনে ও ৩ জনকে হাসপাতাল আইসোলেশনে এবং ১০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৫০৬ জন, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২জন, আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১জন।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ চুয়াডাঙ্গায় প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় ইতালি ফেরত এক যুবক। তার বাড়ি আলমডাঙ্গায়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ওই যুবক।

Comments (0)
Add Comment