ডেস্ক নিউজ:
চুয়াডাঙ্গায় মুষলধারে বৃষ্টির কারণে পণ্ড হয়ে গেছে ঈদগাহের ঈদ জামাত। সকল প্রস্তুতি থাকলেও বৃষ্টির কারণে চুয়াডাঙ্গা শহর ও আশপাশের ঈদগাহগুলোতে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
এছাড়াও ঈদের দিন চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের সর্বত্রই ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে; কোথাও কোথাও ঈদ জামাতে বাগড়াও দিয়েছে বৃষ্টি। তবে বৈশাখের খরতাপে ভ্যাপসা গরম কমায় দেশজুড়ে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টির কারণে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় হয়েছে বিভিন্ন মসজিদে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশে অস্থায়ী দমকা হাওয়া বয়ে যায়। এরপরই এক পশলা বৃষ্টি হয়। এতে চুয়াডাঙ্গায় বিঘ্নিত হয় ঈদ জামাত। পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের দিনে সকাল ৭টায় চুয়াডাঙ্গা শহর ও আশপাশ এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির কারণে ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শহরের কোর্ট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় প্রথম জামাতে জেলা প্রশাসক আমিনুল ইসলাম খানসহ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন। জেলার অন্যান্য স্থানেও মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈশাখের শুরু থেকে তাপপ্রবাহ বয়ে যায় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। গত কয়েকদিনের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে তা কিছুটা প্রশমিত হয়ে আসে। পরবর্তী ৭২ ঘন্টায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে কুমারখালীতে ৪৭ মিলিমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঢাকা ছাড়াও টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, নিকলি, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। এসময় ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টি হয়।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বজ্রপাতে দুই স্কুল ছাত্রসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মেহেরপুরেও বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি/ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এতে দিনের তাপমাত্রা ২-৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে ৩৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নিম্নচাপের আভাস: এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ও কালবৈশাখীর মধ্যে চলতি সপ্তাহে নিম্নচাপ সৃষ্টির আভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মে মাসের দীর্ঘ মেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ২-৩ দিন বজ্র বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সঙ্গে মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।
দেশের অন্যত্র ৫-৭ দিন মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। চলতি মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে) ও দেশের অন্যত্র একটি বা দুটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
পরিচালক জানান, মে মাসে একটি বা দুটি নিম্নচাপও সৃষ্টি হতে পারে বঙ্গোপসাগরে। এরমধ্যে এ মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া একটি ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
চলতি মাসে ভারি বর্ষণে উত্তর ও উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় কিছু এলাকায় স্বল্পমেয়াদী আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
ডেস্ক/ইউএম/০৩০৫/২২-১৮৪৮