স্টাফ রিপোটার: চুয়াডাঙ্গায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে স্মার্ট আইডি কার্ড ও ডিজিটাল সার্টিফিকেট তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। অনুষ্ঠানে ১০৩ জন জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড এবং মৃত ১৫৭ পরিবারের সদস্যদের কাছে শুধুমাত্র ডিজিটাল সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।
এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধুর পক্ষেই সম্ভব হয়েছিলো, বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা। বঙ্গবন্ধুর ডাকেই আমরা চুয়াডাঙ্গার মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম। আজ এখানে যারা চুল-দাড়ি পাকা মানুষগুলো বসে আছি, সেদিন আমরা তরুণ ছিলাম। সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকেই আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই আজ আমরা স্মার্ট কার্ড পাচ্ছি। ডিজিটাল হচ্ছি। অনেক দেরিতে হলেও, ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড হাতে পেলাম। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এতে আমারও ভালো লাগছে। নানা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরও কিছু মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা হাফিজুর রহমান জোয়ার্দ্দার।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ডিজিটাল সনদ এবং স্মার্ট কার্ড সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ। এর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবে। এটা যত্ন করে রেখে দেবেন। এটা একটা স্বীকৃতি, সম্মান তথা মর্যাদা।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজহারুল ইসলামের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শারমিন আক্তার, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম মালিক প্রমুখ।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৫৬৫ জন মুক্তিযোদ্ধার হাতে পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড তুলে দেয়া হবে। প্রথম দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ২৬০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড তুলে দেয়া হয়। পরে, বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহীদের রুহের শান্তি কামনা করে এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবার আগে সদর উপজেলায় ডিজিটাল সার্টিফিকেট ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণের মূল উদ্যোক্তা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিম ভুইয়া বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব এবং বাঙালীর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জন্য কিছু করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।