চুয়াডাঙ্গায় নামাজরত পিতাকে কুপিয়ে হত্যা করলো পাষণ্ড সন্তান

মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়ায় বিপত্তি : মাদরাসাছাত্র ছেলে রিফাত গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার পলাশপাড়ায় মাদারাসাছাত্র ছেলের ছুরিকাঘাতে পিতা দোদুল হোসেন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ছেলে কেএএম রিফাতকে (১৭) আটক করেছে পুলিশ। নিহত দোদুল হোসেন রিন্টু (৫০) চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পলাশপাড়ার মৃত কাজী নূর মোস্তফার ছেলে। রিফাত চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদরাসার ১০ম শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ছেলেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে নিষেধ করতো পিতা দোদুল হোসেন। গতকাল শনিবার ছেলের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় পিতা। এরই জের ধরে রাত পৌঁনে ৮টার দিকে নামাজরত পিতা দোদুল হোসেনকে পিছন থেকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে মাদরাসাছাত্র ছেলে রিফাত। এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুরকোলে লুটিয়ে পড়েন দোদুল। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মুমূর্ষু অবস্থায় দোদুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যান তিনি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তারেক হাসান বলেন, নিহতের শরীরে একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যার মধ্যে একটা গুরুতর ছিল, যেটা পিছন থেকে কিডনি সোজাসুজি লেগেছে। তাকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন তার পালস্ ছিল মৃদু। আমরা দ্রুত চিকিৎসা দিয়ে ওয়ার্ডে ভর্তি করি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান জানান, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত ছেলে রিফাতকে আমরা থানা হেফাজতে নিয়েছি। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। তদন্ত চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মীর মোহাম্মদ জান্নাত আলীর নিকট একাধিকবার ফোন দিলে ফোনটি রিসিভ হয়নি। তবে ওই মাদরাসার শারীরিক শিক্ষার সহকারী শিক্ষক রকিবুল ইসলামের কাছে ফোন দিলে তিনি বলেন, যে সন্তান তার পিতাকে হত্যা করতে পারে, তার লেখাপড়া ও মানুষ হবার মানসিকতা যে নেই, সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও সভাপতিসহ সকল শিক্ষকের সম্মতিতে এমন শিক্ষার্থীকে মাদরাসা থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, রিফাত মোবাইলে গেমে আসক্ত। মাগরিবের আগে বাবা দোদুল হোসেন মোবাইল কেড়ে নেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, ছেলে রিফাত মোবাইলে আসক্ত ছিল। পিতা দোদুল হোসেন মোবাইল কেড়ে নিয়ে নামাজে দাঁড়ালে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ছেলেকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।