স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়–হুদায় আরও একজন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রঘুনাথপুরের একেএম ফজলুল হক বাবুকে রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২ জনে। অপরদিকে চুয়াডাঙ্গায় আরও ৫৭ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ১৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা এ সংখ্যক রোগী শনাক্ত হয়। এ হিসেবে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্তের হার ৪৩ দশমিক ১৮। সপ্তাহ জুড়েই এ হারে করোনা ভাইরাস রোগী শনাক্ত হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। রোববার চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ আরও ১২১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছে।
রোববার নতুন শনাক্তকৃত ৫৭ জনের মধ্যে ৩৫ জনই দামুড়হুদার। ১৩ জন সদর উপজেলার। আলমডাঙ্গা উপজেলার ২ জন ও জীবননগর উপজেলার ৭ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২শ ৭৯ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮শ ৮৬ জন। স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে এ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩২২ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ৩৬ জন, বাড়িতে ২শ ৮৩ জন, রেফার রয়েছেন ৩ জন। দামুড়হুদার ৩৫ জনের মধ্যে অধিকাংশের বাড়িই মুক্তারপুরে। এ গ্রামটিসহ দামুড়হুদা উপজেলার ১৮টি গ্রাম লকডাউন করা হয়েছে। এরপরও শতভাগ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা হচ্ছে না। মাস্কপরারও তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অথচ দামুড়হুদাসহ চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ.কে.এম ফজলুল হক ওরফে বাবুর (৫২) মৃত্যু হয়েছে। মৃত বাবু উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত ভুন্দা উস্তাগারের ছেলে ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলি আজগার টগরের ভাগ্নে।
রোববার সন্ধায় ঢাকায় নেওয়ার পথে সে মারা যায়। মৃত এ.কে.এম ফজলুল হক বাবু ওস্তাগারের ফুপাতো ভাই সাবেক হাউলি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, গত কয়েক দিন আগে বাবু করোনায় আক্রান্ত হয়। তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হলে রোববার দুপুরে তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অক্সিজেন দেওয়া অবস্থায় ঢাকায় নেওয়ার পথে সন্ধায় আরিচা ঘাটের নিকট সে মারা যায়। ইমলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে বলে ও তিনি জানান। এদিকে দামুড়হুদায় আক্রান্তের হার প্রতিনিয়ত ব্যপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে সক্রিয় রোগী সদর উপজেলার ৭৮ জন। এর মধ্যে বাড়িতে ৬৫ জন, হাসপাতালে ১২ জন ১ জন রেফার। আলমডাঙ্গা উপজেলার সক্রিয় ২৪ জন রোগীর মধ্যে একজন রেফার, ৩ জন হাসপাতালে ২০ জন বাড়িতে। দামুড়হুদা উপজেলার ১৬৫ জনের মধ্যে হাসপাতালে ২০ জন, একজন রেফার ও ১৪৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে রয়েছেন। জীবননগর উপজেলার ৫৫ জন সক্রিয় রোগীর মধ্যে একজন হাসপাতালে ৫৪ জন নিজ নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপরদিকে দেশে শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৮ হাজার ৭শ ৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৪শ ৩৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২শ ৪২ জন। মারা গেছেন ৪৭ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসেবে ১৩ হাজার ১শ ১৮ জন।
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গায় রোববার পর্যন্ত ১১ হাজার ৭৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৬শ ৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে এসেছে।