স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় গতকাল রোববার দুজন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেলেও সিভিল সার্জন বলেছেন, এদিন একজনও কোভিড-১৯ রোগী মারা যাননি। আগামীকাল মঙ্গলবার তথা একদিন পর এই মৃত্যুর তথ্য জানানো হবে। এদিকে গতপরশু শনিবার মধ্যরাত থেকে গতকাল রোববার রাত ১০ টা পর্যন্ত ৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে দুজন করোনা ভাইরাস পজিটিভ। বাকি ৫ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
অপরদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে গতকাল রোববার নতুন ৪৮৯ জনের নমুনা নেয়া হয়েছে। এদিন পূর্বের প্রেরণকৃত ৫০৩ জনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ১১০ জনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরে ৬৪ জন, আলমডাঙ্গায় ১৫ জন, দামুড়হুদায় ২২ জন এবং জীবননগর উপজেলার ৯ জন রয়েছে। গতকাল রোববার যারা করোনা ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরিষাডাঙ্গা গ্রামের আলী মণ্ডলের মেয়ে রসুনা বেগম (৬০) সম্প্রতি সর্দি কাশি জ্বরে আক্রান্ত হন। তাকে গত ১৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১০ দিকে সদর হাসপাতালে হলুদ জোনে ভর্তি করে নমুনা নেয়া হয়। ২০ জুলাই জানা যায় তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ। এরপর নেয়া হয় হাসপাতালের রেডজোনে। গত শনিবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫০ মিনিটের দিকে রসুনা বেগমের মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ে সাজিদা খাতুন (৬০) গত ১৫ জুলাই দুপুর দেড়টার দিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালের রেডজোনে ভর্তি হন। গতকাল রোববার বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে তিনি মারা যান। এছাড়াও করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গোলাম হোসাইনের মেয়ে সমিরণ নেছা। তাকে গত শনিবার (২৫ জুলাই) দিবাগত রাত ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। তাকে হলুদ জোনে ভর্তি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। রোববার সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটের দিকে মারা যান ৬৫ বছর বয়সী সমিরণ নেছা। আলমডাঙ্গা উপজেলার চিতলা গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে কুতিলা খাতুন সম্প্রতি সর্দি কাশি জ্বরে ভুগতে থাকেন। তাকে ১৬ জুলাই সকাল ৮ টা ২০ মিনিটের দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। হলুদ জোনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। গতকাল রোববার সকাল ৬ টা ৫০ মিনিটের দিকে ৬৪ বছর বয়সী কুতিলা খাতুন মারা যান। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আব্দুস সালামের মেয়ে সাঈমা খাতুন (৬০) সর্দি কাশি জ্বর ও গলায় ব্যথায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্টও ক্রমশ বাড়ছিলো। তাকে গত ২৪ জুলাই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা দেখে হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তি করে চিকিতসক। শনিবার দিবাগত রাত ১২ টা ৫০ মিনিটের দিকে মারা যান তিনি।
চুয়াডাঙ্গা হাজরাহাটি গ্রামের ইলাহী মণ্ডলের মেয়ে আজিরণ বেশ কিছুদিন ধরে সর্দি কাশি জ্বরে ভুগছিলেন। তার শ্বাসকষ্ট বাড়লে গত ২৪ জুলাই নেয়া হয় সদর হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় হলুদ জোনে। গতকাল রোববার রাত ৯ টার দিকে মারা যান ৬৫ বছর বয়সী আজিরণ। মেহেরপুর জেলার পাটকেলপোতা গ্রামের আনিছের মেয়ে রওশন আরা (৫৫) সম্প্রতি সর্দি কাশি জ্বরে ভুগতে থাকেন। তাকে ২৪ জুলাই সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হলুদ জোনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৬ টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ ৪৮৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে। এদিন পূর্বের ৫০৩ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১১০ জন পজিটিভ হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ৫ হাজার ৫৭০ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সুস্থ হয়েছেন ৫৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হলেন ৩ হাজার ৬৬৫ জন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় শনাক্তকৃত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে আছেন ১০৪ জন। নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৮শ ৩৪ জন। সিভিল সার্জনের দেয়া তথ্য মতে চুয়াডাঙ্গায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৬৭ জন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গাতে মারা গেছেন ১৫০ জন এবং জেলার বাইরে ১৬ জন।