চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে ১৩ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ : বাতিল ৭

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই সম্পন্ন : আপিল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনে ১৩জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। গতকাল সোমবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রম শেষে রিটার্নিং অফিসার এ ঘোষণা দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আপিল আবেদন গ্রহণ শুরু হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের আইন শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলকৃতরা হলেন, তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী তাইজাল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ সামসুল আবেদীন খোকন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আফরোজা পারভীন। এর মধ্যে প্রার্থীরা হলফনামায় তথ্য গোপন, পৌর ট্যাক্স পরিশোধ না করা এবং শতকরা এক ভাগ ভোটারের তালিকায় নম্বর না পাওয়ায় এদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে মনোনয়নপত্র বাতিলকৃতরা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মক্তিযোদ্ধা মীর্জা শাহরিয়ার মাহমুদ লন্টু, নুর হাকিম, নজরুল মল্লিক ও আব্দুল মালেক মোল্লা। এসব প্রার্থীরা শতকরা এক ভাগের কম ভোটারের যথাযথ তথ্য না দেয়া, পৌর ট্যাক্স ও বিদ্যুত বিল পরিশোধ না করায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, জাতীয়পার্টির অ্যাড. সোহরাব হোসেন, এনপিপির ইদ্রিস চৌধুরী, জাকের পার্টির সালাম উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা, এমএ রাজ্জাক খান ও এম শহিদুর রহমানকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী আজগার টগর, জাতীয় পার্টির অ্যাড. রবিউল ইসলাম, জাকের পার্টির আব্দুল লতিফ খান, এনপিপির ইদ্রিস চৌধুরী, জাসদের প্রার্থী দেওয়ান মো. ইয়াছিনউল্লাহ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু হাশেম রেজার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার আরো জানান, তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাতিলকৃত প্রার্থীরা ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকাস্থ নির্বাচন কমিশনে আপিল দায়ের করতে পারবেন। ১০-১৫ ডিসেম্বর শুনানী অনুষ্ঠিত হবে। বৈধ প্রার্থী ১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রত্যাহার করতে পারবেন। ১৮ ডিসেম্বর বেলা ১০টায় প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। নির্বাচনের ৩ সপ্তাহ পূর্ব থেকে কেউ ভোট চাওয়া যাবে না। প্রমাণ ছাড়া আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর থেকে কপি দেয়া হবে। এ সময় অতিেিরক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল হামিদ রেজা (সার্বিক), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কবির হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. আনিসুজ্জামান, জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মোতাওয়াক্কিল রহমান, চার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাহুল রায়, সকল প্রার্থী, প্রস্তাবক ও সমর্থনকারী, বিভিন্ন ব্যাংক, বিদ্যুত, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তরা এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের আইন শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাতিল ও গ্রহণাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী বা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিটার্নিং অফিসারের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পরবর্তী ৫ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি আকারে (আপীলের মূল কাগজপত্র ১ সেট ও ছায়ালিপি ৬ সেটসহ) আপীল দায়ের করতে পারবেন।’ এজন্য নির্বাচন ভবনে দেশের ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি বুথ করা হয়েছে। এই ১০ জন কর্মকর্তার কাছে আপিল আবেদন জমা দিতে হবে। ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ১০০ টি করে আপিল আবেদন ক্রমানুসারে নিষ্পত্তি করা হবে বলেও তিনি জানান। আপিল আবেদনের শুনানী শেষে আপিলের ফলাফল মনিটরে প্রদর্শন, আপিলের পর রায়ের পিডিএফ কপি ও আপিলের সিদ্ধান্ত রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইল একাউন্টে পাঠানো হবে এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হবে। এছাড়া, আপিল রায়ের অনুলিপি সিডিউল মোতাবেক নির্বাচন ভবনের অভ্যর্থনা ডেস্ক থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। রায়ের অনুলিপি প্রাপ্তির আবেদনের ভিত্তিতে বিতরণ করা হবে (উল্লেখ্য, নামঞ্জুর আপিলের রায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রদান করা হবে)। এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলে ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় শেষ হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি রোববার।