গাংনী প্রতিনিধি,
অনলাইন ডেস্ক: মেহেরপুরের গাংনীর পূর্বমালসাদহ গ্রামের গৃহবধু চম্পা খাতুন (২২) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ডাকাতির নাটক সাজিয়ে হত্যাকাণ্ড ধাপাচা দেয়ার অপচেষ্ট করে ঘাতক স্বামী। আজ রোববার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মেহেরপুর সিনিয়র চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার খাস কামরায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছে গ্রেফতার স্বামী জুয়েল রানা। বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান জানান, বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করে জুয়েলকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
গেল ১৪ এপ্রিল মধ্য রাতে নিজ বাড়ির পাশে চম্পা খাতুনের মরদেহ এবং অদূরে আহত অবস্থায় তার স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পরিবারের লোকজন। ডাকাতের হামলায় এ হতাহতের ঘটনা বলে স্বামী জুয়েল ও তার পরিবার দাবি করলেও পুলিশের তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত হয়।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান ঘাতক জুয়েলের স্বীকারোক্তির বর্ণনা দিয়ে জানান, জুয়েলের মা ও স্ত্রীর নামে একটি এনজিও থেকে এক লাখ ৮৬ হাজার টাকা ঋণ তুলে শ্বশুরকে দেয় জুয়েল। এ টাকা সময়মতো শ্বশুর পরিশোধ করতে না পারায় স্ত্রীর সাথে জুয়েলের বিরোধ শুরু হয়। এ বিরোধের জেরে ১৪ এপ্রিল মধ্য রাতে নিজ ঘরে ঘুমন্ত স্ত্রীকে গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যকাণ্ড ধামাচাপা দিতে নিহত স্ত্রী ও নিজের মাথায় ধারালো অস্ত্র (হেঁসো) দিয়ে কোপ দিয়ে ডাকাতের হামলা বলে অপপ্রচার করে।
ওসি আরো জানান, নিহতের পিতা আব্দুর রশিদ বাদি হয়ে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুয়েল আত্মগোপন করে। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ওসি তদন্ত সাজেদুল ইসলাম একমাত্র আসামি হিসেবে শনিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গাংনী হাসপাতালের সামনের এলাকা থেকে জুয়েলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তির পর আদালতে একই স্বীকারোক্তি দেয় জুয়েল। এদিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ওড়না ও হাঁসুয়া উদ্ধার করেছে পুলিশ।