গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে ছাত্রলীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, বিএনপি অফিসে হামলা ও মোটর সাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে গাংনী বাসস্ট্যান্ডে এ উত্তেজনা শুরু হয়।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। গাংনী উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতার্কীরা মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি-জামায়াত বিরোধী সেøাগান দিয়ে গাংনী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছায় বিক্ষোভ মিছিলটি। এসময় বিএনপি অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। অফিসের সামনে থাকা যুবদল নেতা জামাল উদ্দীনের মোটর সাইকেলে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে বাসস্ট্যান্ড রেজাউল চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করছিলো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় বিএনপির গুটি কয়েক নেতাকর্মী তাড়া দেয়। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এরপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আবারও সংঘঠিত হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি অফিসে হামলা করে। ছিড়ে দেয়া হয় বিএনপি অফিসের সাইনবোর্ড। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের চড়াও হওয়ার প্রতিবাদে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।
গাংনী উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবলু অভিযোগে জানান, এর আগেও কয়েক দফা অফিসে হামলা চালানো হয়। গতকালের ঘটনার সময় বিএনপি অফিসের মধ্যে যুবদল নেতা জামাল উদ্দীন ও ইনামুল হক বসেছিলেন। উত্তেজিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে অফিসে হামলা চালায়। তারা অফিসের গেটের গ্রিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। অফিসের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন যুবদলের ওই দুই নেতা। অফিসের বাইরে যুবদল নেতা জামাল উদ্দীনের মোটর সাইকেলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নানা নির্যাতন অত্যাচার সহ্য করেও আমরা মুখ বুজে ছিলাম। কিন্তু বারবার অফিসে হামলার মধ্য দিয়ে তারা আমাদেরকে প্রতিবাদ করতে বাধ্য করেছে। বিনা কারণে এভাবে হামলা হতে থাকলে যদি আমাদের দলের কোনো নেতাকর্মী প্রতিরোধ করে তাহলে কি করার থাকে? প্রশ্ন রাখেন তিনি। হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শান্ত করে গাংনী বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রামদা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতার্কীদের ওপর আক্রমণ করেছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। যেকোন প্রকার বিশৃখলা এড়াতে গাংনী শহরে পুলিশের টহল ও নজদারি বাড়ানো হয়েছে।