মেহেরপুর অফিস: ক্রীড়াক্ষেত্রে বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। তিনি বলেছেন, দু-একটি বিচারের আওতায় আনতে পারলে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামে একটি মিনি স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। সম্প্রতি বডি বিল্ডার জাহিদ হাসান শুভকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়াঙ্গনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছে মন্ত্রণালয়। ফুটবল ও ক্রিকেট বোর্ডের পাশাপাশি ক্রীড়া অফিস ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় নানা ধরনের আয়োজন করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে ভালো ভালো ফুটবলার ও ক্রিকেটার বের হয়ে আসছে। অন্য খেলায়ও মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ছেলে-মেয়েদের ঘর থেকে বের করে আনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে তারা ঘরবন্দি জীবন থেকে বের হয়ে মাঠমুখী হয়।
ফলক উন্মোচনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে সম্প্রতি বডিবিল্ডার ফাইনালে অসন্তোষসহ দেশে খেলোয়াড়দের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তালিকাভুক্ত ৫৩টি ইভেন্ট ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে। এতে হাজার হাজার খেলোয়াড় রয়েছে। সেখানে বডিবিল্ডারের মতো একটি ইভেন্টের রেজাল্ট নিয়ে ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন এবং অনাকাক্সিক্ষত।’ দেশে ফুটবল ও ক্রিকেটসহ সব ধরনের ক্রীড়ার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেশে মাঠের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খেলাধুলা কমে গেছে। আবার মামলা জটিলতার কারণে অনেক ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন দীর্ঘদিন হয়নি। এজন্য মেহেরপুরসহ জেলা পর্যায়ের ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে সক্রিয় করতে যে সমস্ত ক্রীড়া সংস্থায় নির্বাচন ঝুলে আছে, সেগুলোর নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘অনলাইন গেমসমুখী নতুন প্রজন্মকে আবার খেলার মাঠমুখী করতে সরকার উপজেলা পর্যায়ে ১৮৬টি স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। আরও ১৫১টি উপজেলায় স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হবে। ২০ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের অংশ হিসেবে মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপিতে ফলক উন্মোচন করা হলো।’ ফলক উন্মোচন শেষে যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ভাতা ও প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে চেক বিতরণ ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নাম ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। এ সময় তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নামানুসারে আমাদের মুজিবনগর। আমরা সেই মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের বাসিন্দা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মেহেরপুরকে সাজাতে দু-হাত উজাড় করে দিচ্ছেন। শুধু মেহেরপুরই না, তিনি বাংলাদেশকে সব দিক থেকে এগিয়ে নিতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মেহেরপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আনারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মো. রাফিউল আলম, গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক এমএ খালেক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমঝুপি ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন আহমেদ চুন্নু প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বারাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, বুড়িপোতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জামান, শ্যামপুর ইউপির চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিন, কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা প্রমুখ। এদিকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছুলে তাদেরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লিংকন বিশ্বাস, আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ, জেলা ক্রীড়া অফিসার আরিফ আহমেদ, জেলা যুব উন্নয়নের অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহিদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম শাহীন, মেহেরপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বারাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম, বুড়িপোতা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জামান, শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।