হারুন রাজু: চুয়াডাঙ্গা তথা এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কেরুজ চিনিকল। এশিয়া মহাদেশের ২য় বৃহত্তম ও বাংলাদেশের সর্বোবৃহত্তম ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠানটি সোনালি অতীত ঐতিহ্য রয়েছে। ৮৫ বছর বয়সী মিলটি সম্প্রতি আধুনিকতার ছোয়া লাগতে শুরু করেছে। ডিস্ট্রিলারি কারখানার ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। মিলটি আধুনিকায়ন, ডিস্ট্রিলারি কারখানায় অটোমেশিন স্থাপনসহ প্রায় দেড়শ কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ চলছে বেশ জোরেসরে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মিলের রাজস্ব ও লোকসানের সঠিক হিসাব কেউ দিতে না পারলেও স্বাধীনতার পর থেকে মিলটিতে কয়েক মরসুম চিনি কারখানায় লোকসান গুনলেও মুনাফা অর্জনের অংকটা বেশ বড়। গত কয়েক অর্থ বছরে মুনাফা অর্জনের পরিমাণ যেন বাড়ছেই। ডিস্ট্রিলারি বিভাগের লাভের টাকায় কেরুজ চিনিকল কারখানা বিভাগের মোটা অংকের লোকসান পোষাতেও হচ্ছে বছর কয়েক ধরে। খামারগুলোতে দীর্ঘ বছর লোকসান গুনলেও ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে সে রেকর্ড ভেঙে দেখেছে লাভের মুখ। বাংলাদেশের শিল্প স্থাপনাগুলোর মধ্যে কেরুজ চিনিকল একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান। চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তবর্তী জনপদ দর্শনায় চিনিশিল্প, ডিস্ট্রিলারি ও বাণিজ্যিক খামারের সমন্বয়ে এ বৃহত্তর শিল্প কমপ্লেক্সটি প্রতিষ্ঠিত। ১৮০৫ সালে মি.জন ম্যাক্সওয়েল নামক এক ইংরেজ তার ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় ভারতের কানপুরে জাগমু নামক স্থানে একটি মদের কারখানা চালু করেন। সময়ের বিবর্তনে নাম, স্থান, মালিকানা, উৎপাদন ও ব্যাবসায়িক কর্মকা- পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত হতে থাকে। ১৮৪৭ সালে মি.রবার্ট রাসেল কেরুর সাথে অংশিদারিত্বে যুক্ত হয়। কিছুদিনের মধ্যে মি. রবার্ট রাসেল তার অংশ বিক্রি করে দেন। ১৮৫৭ সালে ভারতের রোজতে সিপাহী বিপ্লবের সময় প্রতিষ্ঠানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতঃপর তা পুনঃনির্মাণ পূর্বক জয়েন্ট স্টক কোম্পানি গঠন করে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির নতুন নামকরণ করা হয়। রোজতে ব্যবসায় উন্নতি লাভ করায় আসানসোল ও কাটনীতে শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৩৮ সালে চিনি কারখানার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে ইংল্যান্ডের মেসার্স ব্লেয়ার্স লি. ও গ্লাসগো প্রতিষ্ঠান। সে সময় বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয় ১১ হাজার ৫শ মে.টন। অপর দিকে ডিস্ট্রিলারি কারখানায় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে ফ্রান্সের মেসার্স পিনগ্রিসইটি মোলেট। প্রাথমিকভাবে দৈনিক ১ হাজার টন আখ মাড়াই ও ১৮ হাজার প্রুফ লিটার স্পিরিট তৈরির লক্ষ্যে আরো একটি শাখা তদানিন্তন নদীয়া জেলার অর্ন্তগত দর্শনায় স্থাপন করা হয়।
১৯৬৫ সালের পাক-ভারতযুদ্ধের পর এটি পরিণত হয় শত্রু সম্পত্তিতে। ১৯৬৮ সালে কেরু অ্যান্ড কোং (পাকিস্তান) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ইপিআই’র ডিসি’র ওপর ন্যাস্ত করার সরকারি প্রচেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অকার্যকর হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ করা হয় এবং তখন থেকে অদ্যবধি কেরু অ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) লি. নামে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে চিনি, রেকটিফাইড স্পিরিট, দেশিমদ, বিলাতি মদ (গোল্ড রিবেন্ড জিন, রোজা রাম, ওল্ডরাম, ফাইন ব্রান্ডি, চ্যাইরি ব্রান্ডি, ইম্প্রেরিয়াল হুইস্কি, মলটেড হুইস্কি, অরেন্স ক্রাকাউ, জারিনা ভদকা), প্রায় ১৪ বছর ধরে মলটেড হুইস্কি উৎপাদন রয়েছে বন্ধ। কারণ হিসেবে জানা গেছে, জার্মানের বুসবুক কোম্পানি বন্ধ হওয়ার কারণে মদ উৎপাদনের ফ্লেবার ও কাচামাল আমদানি সম্ভব হচ্ছেনা। যে কারণে মলটেড হুইস্কি উৎপাদন রয়েছে বন্ধ। নেদারল্যান্ডে ইন্টার ন্যাশলান ফ্লেবার এ্যান্ড ফ্রাগনেন্স কোম্পানি সব ধরনের ফ্লেবার সরবরাহ করলেও মলটেড ফ্লেবার সরবরাহ করতে পারেনা। উৎপাদন করা হয় ভিনেগার ও জৈব সার। মিলটির অন্যতম উপজাত দ্রব্য আখ, চিটাগুড়, ব্যাগাস ও প্রেসমাড। প্রায় ২০ বছর ধরে বন্ধ রাখা রয়েছে ওষুধ তৈরি কারখানাটি। বছর নয়েক আগে কেরুজ চিনিকলের আরো একটি শাখা বাড়ানো হয়েছে। কেরুজ চিনিকল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব জমিতে স্থাপন করেছে জৈব সার কারখানা। এ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জমির পরিমাণ খামার ৩ হাজার ৩শ ৩৫ দশমিক ৫৬ একর। কারখানা ও কলোনী ১৬৬ দশমিক ১৮ একর জমিতে। ইক্ষুক্রয় কেন্দ্র ৫ দশমিক ৩০ একর জমিতে। নিজস্ব সড়কের জমির পরিমাণ ৪৮ দশমিক ৩৫ একর ও শ্মষান এক দশমিক ২৭ একর। আকন্দবাড়িয়া জৈব সার কারখানা ২৭৯ দশমিক ৭২ একর জমির ওপর। ৯টি বাণিজ্যিক খামারের মধ্যে রয়েছে হিজলগাড়ি, বেগমপুর, ফুরশেদপুর, ঝাঝরি, আড়িয়া, ফুলবাড়ি, ছয়ঘরিয়া, ঘোলদাড়ী ও ডিহিকৃষ্ণপুর। এ প্রতিষ্ঠানে জনবল রয়েছে অফিসার ও স্থানীয় এবং চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক সংখ্যা প্রায় এক হাজার ৩শ। কেরুজ চিনিকলটি আধুনিয়কায়নের কাজ সম্পন্ন হলে শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা কমতে পারে বলেও ধারণা অনেকের। তবে আধুনিকায়নের কার্যক্রম শেষ কবে নাগাদ হবে তা বোঝা মুশকিল।
অপরদিকে কৃষি খামারের সংখ্যা ১০টি, ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা মিলগেটে ২টি, রোড ভিত্তিক ৩৩টি। দেশব্যাপী দেশি মদ বিক্রয় কেন্দ্র ১৩টি ও ফরেন লিকার বিক্রয় কেন্দ্র ৪টি। যদিও প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ৩ টি ছিলো সম্প্রতিকালে আরো একটি বাড়ানো হয়েছে। ফলে বর্তমানে ৪টি বিক্রয় কেন্দ্র। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কেরুজ চিনিকলের আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসেব জানা না গেলেও স্বাধীনতার পরবর্তি সময়ে কেরুজ চিনিকলের সবকটি বিভাগের সমন্বিত হিসাব অনুযায়ি গত ৫২ বছরের সরকারের রাজস্ব খাতায় জমা হয়েছে এক হাজার ৭শ ৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। কয়েক বছর ধরে মিলের চিনিকল কারখানা, জৈব সার কারখানা ও খামারগুলো থেকে লোকসান হলেও তা পুষিয়ে দেয়া হয়েছে ডিস্ট্রিলারি কারখানার উপার্জনের টাকায়। সব লোকসান পুষিয়েও স্বাধীনতা পরবর্তি ৫২ বছরে মুনাফা অর্জনের অংকটাও বড় মাপের। সম্প্রতি সময়ের হিসেব অনুযায়ী ২০০৯-১০ অর্থ বছরে কেরুজ কমপ্লেক্স থেকে ৫৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব দিয়েও মুনাফা অর্জন হয়েছে ১৩ কোটি ৮৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ২০১০-১১ অর্থ বছরে ৬১ কোটি ৩২ লাখ টাকা সরকারের কোষাগারে দিয়েও লাভ হয়েছে ১৫ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ২০১১-১২ অর্থ বছরে মুনাফা অর্জন হয়েছে ২০ কোটি ৩০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। এ অর্থ বছরের সরকারকে রাজস্ব দেয়া হয়েছে ৬৭ কোটি ৭২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে সরকারের রাজস্ব খাতায় ৬৯ কোটি ৪০ টাকা জমা দিয়েও মুনাফা অর্জিত হয়েছে ২২ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে মুনাফা অর্জন হয়েছে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা। সরকারের রাজস্ব খাতে জমা দেয়া হয়েছে ৭১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। স্মরণকালে কম মুনাফা অর্জন হয়েছে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে। হিসেব অনুযায়ী ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে মুনাফা অর্জন হয়েছে মাত্র ৪ কোটি ১৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা। সরকারকে রাজস্ব দেয়া হয়েছে ৬৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে রাজস্ব দেয়া হয়েছে ৬২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। মুনাফা অর্জন হয়েছে মাত্র ৫ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৬৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব দিয়ে মুনাফা অর্জিত হয়েছে ৭ কোটি ৪০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সরকারের খাতায় রাজস্ব জমা হয়েছে ৭৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। মুনাফা অর্জন হয়েছে ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সরকারের রাজস্ব খাতে ৭৩ কোটি ৮২ লাখ জমা দিয়েও মুনাফা অর্জন করেছে ৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। ওই অর্থ বছরে চিনি কারখানার ৬০ কোটি টাকা, বানিজ্যিক খামারে ২ কোটি লোকসান ও ১৯৭ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণের সুদ বাবদ ১৭ কোটি টাকা সহ সর্বমোট টাকার পরিমাণ দাড়ায় ৭৯ কোটি টাকা লোকসান পোষাতেও হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৬৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা সরকারের রাজস্ব খাতায় জমা দিয়ে, চিনি কারখানা, খামার ও জৈব সার কারখানার লোক পুষিয়েও মুনাফা অর্জন হয়েছিলো ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থ বছরে সরকারকে রাজস্ব দেয়া হয়েছে ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। চিনি কারখানা, খামার ও সার কারখানার লোকসান পুষিয়ে ওই অর্থ বছরে মুনাফা অর্জন হয়েছিলো ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থ বছরে কেরুজ কমপ্লেক্সের ৪টি বিভাগের মধ্যে চিনি কারখানা ও ৯টি খামারে লোকসান গুনেছে ৬৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এ দিকে মুনাফা অর্জন হয়েছে ডিস্ট্রিলারি, হ্যান্ড সেনিটাইজার ও ও সার কারখানায়। ওই অর্থ বছরে সরকারকে ১১৪ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েও মুনাফা অর্জন হয়েছে ৪৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কেরুজ কমপ্লেক্স থেকে সরকারের রাজস্ব খাতায় জমা দেয়া হয়ে ১৪৫ কোটি টাকা। চিনি কারখানার সাড়ে ৬৮ কোটি টাকা লোকসান পুষিয়েও ৮০ কোটি টাকা মুনাজা অর্জন হয়েছে কেরুজ কমপ্লেক্সে। যা চিনিকল প্রতিষ্ঠালগ্নে মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। কেরুজ কমপ্লেক্স একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রাখতে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি কেরুজ কমপ্লেক্স। সর্বক্ষেত্রে কেরুজ চিনিকলের রয়েছে অবদান। সরকারের এ মূল্যবান সম্পদ গর্বিত ও সমৃদ্ধ করেছে এ জেলা তথা দর্শনাকে। তাই এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে এ প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখার জন্য অন্যতম কাচামাল আখচাষ বাড়ানো খুবই জরুরি। কেরুজ কমপ্লেক্সে যে যেখানে যে যে দায়িত্বে রয়েছেন, তাদেরকে নিষ্টা, আন্তরিকতার মধ্যদিয়ে কর্মদক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। তাহলেই রক্ষা পাবে চিনি কারখানা, এ অঞ্চল ফিরে পাবে সোনালি অতীত। তাই আসুন কেরুজ চিনিকলকে বাচাই নিজেদের স্বার্থে। সেই সাথে তিনি আরও বলেন, আখচাষ বাড়াতে সরকার নানামুখি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে আখের মূল্য বাড়িয়েছে যা ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ আখ মাড়াই মরসুমেও কৃষক বেশি দামে আখ বিক্রি করতে পারবে। পাশপাশি কৃষকদের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করণেও আমরা সচেষ্ট। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে সামাজিক উন্নয়নে অর্থ বরাদ্ধ দিয়ে থাকে। তার মধ্যে রয়েছে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি হাফেজিয়া মাদরাসা, একটি জামে মসজিদ, সুগার সেচ ও রোড ডেভলপমেন্ট ফান্ড হতে মিলজোন এলাকাতে চাষিদের ইক্ষু পরিবহনের সুবিদার্থে এলাকার রাস্তা, কালভার্ট নির্মান ও মেরামতে অর্থ দেয়া। শিক্ষা সেচ তহবিলের আওতায় এলাকার স্কুল কালেজ ও মাদরাসার উন্নয়নের জন্য আর্থিক অনুদানও প্রদান করা হয়ে থাকে। শ্রমিক ও তার পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য রয়েছে একটি ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। সবকিছু মিলিয়ে এলাকায় অর্থসামাজিক উন্নয়নের চালিকা শক্তি হিসেবে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের মূল্যবান সম্পদ কেরুজ চিনিকলটি টিকিয়ে রাখতে বেশি বেশি আখচাষের কোনো বিকল্প নেই। এলাকার অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি, ঐতিহ্যবাহী এ চিনিকলের সোনালি অতীত যেন দিনদিন হারাতে বসছে আখের অভাবে। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরেই চিনি কারখানায় ব্যাপকভাবে লোকসান গুনতে হচ্ছে চিনিকল কর্তৃপক্ষকে।