কুষ্টিয়ায় চলমান কঠোর বিধিনিষেধ আরও ৭ দিন বাড়লো

একদিনে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৯ করোনা রোগীর মৃত্যু
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় ১৩ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৯জনের মৃত্যু হয়েছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৮জন ও মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার রাত ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ১৪৯ জনে দাঁড়ালো। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, রাতে ৭জন মারা গেছেন। আর সকালে মারা গেছেন একজন। এটিই জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, এই হাসপাতালে একসঙ্গে এতো মৃত্যু এটাই প্রথম। পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার রাত আটটা থেকে শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত) জেলায় নতুন করে ১১২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনার তিনটি ওয়ার্ডে ১০০ শয্যার বিপরীতে বর্তমানে ১১৩ জন রোগী ভর্তি। গত ২০ ঘণ্টায় ১৯ জন নতুন করে পজিটিভ রোগী ভর্তি হয়েছেন। ওয়ার্ডে নতুন করে আর কোনো রোগী ভর্তির সুযোগ নেই। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জরুরি সভায় বসেন। জানতে চাইলে সভা থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন বলেন, পরিস্থিতি ভালো না। উপজেলা পর্যায়, এমনকি গ্রাম থেকে রোগী বেশি আসছেন। ২৫০ শয্যা হাসপাতালকে খুবই দ্রুত সময়ে কোভিড ডেটিকেটেড করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আর অক্সিজেন যা আছে এবং যে হারে রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাতে সংকটে পড়তে হতে পারে। আবদুল মোমেন আরও বলেন, জেলাজুড়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করা ছাড়া রোগী বৃদ্ধির হার কোনোভাবেই কমানো যাবে না। এ বিষয়ে জোর দিতে হবে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ১১ জুন মধ্যরাত থেকে অধিক সংক্রমিত কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এই বিধিনিষেধ অনেকটা কাগজেকলমেই সীমাবদ্ধ ছিলো। মাঠপর্যায়ে তা খুব একটা কার্যকর হতে দেখা যায়নি। গতকাল ওই বিধিনিষেধের মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে আরও ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে আজ সকাল থেকে এই বিধিনিষেধ কিছুটা কার্যকর করতে প্রশাসনের তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। ঈদুল ফিতরের পর থেকে কুষ্টিয়ায় করোনা সংক্রমণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। গত দুই দিনে ২৬৮ জনের পজিটিভ শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪৮ জন। সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম ৩ জুন জেলায় কঠোর লকডাউনের সুপারিশ করেছিলেন। জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবিরও কঠোর লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই বলে একই দিন একইভাবে সুপারিশ করেছিলেন। কিন্তু সে সময় প্রশাসন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সুপারিশ কর্ণপাত করেনি।

 

Comments (0)
Add Comment