করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশায় ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা

পহেলা ফাল্গুন বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি সামনে রেখে বেড়েছে চাহিদা
কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: করোনাকালে গত দুই বছরে ফুল ব্যবসায় ধস নেমে আসে। লকডাউনের কারণে দেশের কোথাও ফুল পাঠানো যায়নি। ফুল সম্পৃক্ত সব ধরনের ইভেন্ট বন্ধ থাকায় ফুলের চাহিদাও ছিলো না। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ফুলের চাহিদা বাড়তে থাকে। হতাশা থেকে আশায় বুক বাধছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের পর থেকে ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। তাই ফেব্রুয়ারি মাসের তিনটি বিশেষ দিবসকে সামনে রেখে ঝিনাইদহের ফুলচাষিরা পার করছেন ব্যস্ত সময়।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে ঝিনাইদহ ও যশোরে ফুল চাষ বেশি হয়। এই দুই জেলার ফুল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যশোরের গদখালী ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ও সদরের গান্না বাজারে ফুলের বাজার বসে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় ১২২ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। সদরে ২২ হেক্টর, কালীগঞ্জে ২৫ হেক্টর, মহেশপুরে ৩৮ ও কোটচাঁদপুরে ১৫ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে গাঁদা, জারবেরা, মল্লিকা, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস উল্লেখযোগ্য। ফেব্রুয়ারি মাসে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। এই মাসে একুশে ফেব্রুয়ারি, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও পহেলা ফাল্গুন রয়েছে। এই তিনটি দিবসে ফুল বিক্রি বেশি হয়। ঝিনাইদহে প্রায় ১০০০ ফুল চাষি রয়েছেন এবং ফুল তোলা, প্যাকেজিং, বিক্রেতা ও বিপননের সঙ্গে প্রায় আড়াই থেকে ৩ হাজার মানুষ জড়িত। ফুলচাষি হাফিকুর রহমান জানান, মহামারি করোনাকালে লকডাউনে ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে। লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ফুলের চাহিদা বেড়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন চাষিরা। ফেব্রুয়ারি মাসে ভালো ব্যবসা হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। আরেক কৃষক টিপু সুলতান জানান, লকডাউনের সময় অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারা চেষ্টা করছেন। সামাজিক অনুষ্ঠান চললে ফুলের চাহিদা থাকবে। বর্তমানে বাজারও ভালো যাচ্ছে। এভাবে চললে তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ফুলচাষিরা চরম বিপদে পড়েছিলো। ফুলচাষ দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখলেও দ্রুত পচনশীল হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা কেউ সহজ শর্তে ঋণ নিতে চাইলে কৃষি অফিস তাদের সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

 

Comments (0)
Add Comment