স্টাফ রিপোর্টার: র্যাব-পুলিশ ও সেনা বাহিনীর নিয়মিত অভিযানেও কমছে না রাজপথে অপ্রয়োজনে মানুষের ঘোরাফেরা। গত কয়েকদিনের অভিযানে অন্তত ৪ শতাধিক মানুষকে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা করা হলেও পরিস্থিতি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না, বরং প্রতিদিনই রান্তায় মানুষের জটলা বাড়ছেই। এমন পরিস্থিতিতে আরও কঠোর হওয়ার তাগিদ দিয়েছে সচেতন মহল। তা না হলে যেমন হুমকির মুখে পড়ছে সরকারের নেয়া সব ধরনের পদক্ষেপ, তেমনি সংক্রমণও বাড়ছে বলে জানা গেছে। তবে এক শ্রেণির মানুষের দাবি তারা নিতান্তই পেটের তাগিদে বের হচ্ছেন। রাস্তায় বেরিয়ে আসছে রিকশা ও অটো চালকরাও। ঘরে খাবার না থাকার কারণে তারা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছেন বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, এখন প্রায় সারাদেশ এক জেলা থেকে অন্য জেলা বিচ্ছিন্ন। অধিকাংশ এলাকায় চলছে লকডাউন। বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। তবে থেমে নেই অলিগলিতে লোক সমাগম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিয়মিত আড্ডাবাজি চলছেই। এমন পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটিতে অকারণে ঘোরাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বিভিন্ন থানা এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। গতকালও তা অব্যাহত ছিলো। একইসঙ্গে প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় র্যাবের নিয়মিত আদালত বসছে।
জানা গেছে, গত তিন দিনে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রধান সড়কে লোক চলাচল ছিলো সীমিত। তবে অলিগলির চিত্র ছিলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। অনেক গলিতেই আধাখোলা অবস্থায় চা ও ছোট ছোট মুটি দোকান খোলা দেখতে পাওয়া যায়। ওই দোকানগুলো কেন্দ্র করেই জটলা দেখা গেছে। সেখানে অল্প বয়সিদের সিগারেট হাতে আড্ডা দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি বাজার করতে আবার অনেকে বের হয়। তবে মূল ভিড় ছিলো আড্ডাবাজদের। আবার অনেকে রাস্তায় লোকসমাগম দেখতেও বের হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা এখন বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা সামাজিক আকারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এ কারণে সামাজিকভাবে দৈহিক দূরত্ব সৃষ্টি করা না হলে এটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এ কারণে এখনই এ ধরনের আড্ডা বন্ধ করতে না পারলে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
পুলিশ মাইকিং করে বাসা থেকে বের না হওয়ার জন্য অনুরোধ করছে। তারপরও পুলিশের গাড়ি চলে গেলেই এলাকার উঠতি বয়সিরা জড়ো হয়ে আড্ডায় মেতে উঠছে। তারা রীতিমতো পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। এতে সামাজিক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১ হাজার ৮৩৮ রোগী শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছে ৭৫ জন। এরমধ্যে ৫০ শতাংশ ঢাকার। আগে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় বেশি সংক্রমণ দেখা দিলেও তা এখন আর নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। বলতে গেলে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায়ই এখন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ধরনের আড্ডাবাজি বন্ধ করতে শুরু থেকেই পুলিশ কঠোর ছিলো। কিন্তু এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে সমালোচনা শুরু হলে পিছু টান দিতে তারা বাধ্য হন। এখন আবারও তারা কঠোর অবস্থানে যেতে সমালোচনার ভাগিদার হতে চাচ্ছেন না। এ কারণে ত্রাণ বিতরণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে তারা সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে ঘরে পাঠাচ্ছেন। এতে বিষয়টি হালকাভাবে নিয়ে তারা আবারও রাস্তায় বেরিয়ে আসছেন। অথচ বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়ার জন্য যদি কঠোর হওয়া যেতো তাহলে এসব লোকজন রাস্তায় বের হওয়ার সাহস করতো না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা এখন বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা সামাজিক আকারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এ কারণে সামাজিকভাবে দৈহিক দূরত্ব সৃষ্টি করা না হলে এটি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এ কারণে এখনই এ ধরনের আড্ডা বন্ধ করতে না পারলে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।