আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর
স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার ভোলারদাড়ি গ্রামে মিম খাতুন (১৯) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এতো অল্প বয়সে ১১ মাসের দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে রেখে মিম খাতুনের মৃত্যু শ্বশুর বাড়ি এবং বাপের বাড়ির লোকজন কেউই মেনে নিতে পারছেন না। খোদ চিকিৎসকও মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে নির্ণয় করতে পারেনি। নিহত মিম খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ ইউনিয়নের ভোলারদাড়ি গ্রামের রাজমিস্ত্রী রমজানের স্ত্রী এবং একই ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামের ডাবলুর মেয়ে।
শাশুড়ি হাজেরা খাতুন বলেন, গতকাল আমি ও পুত্রবধূ মিম খাতুন এক সাথে খাবার রাতের খাবার খেয়েছি। তারপর শিশু সন্তান মারুফকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে যায় মিম খাতুন। এর কিছুক্ষণ পর মিম অসুস্থবোধ করলে আমাকে বলে। পরে আমার ছেলে রমজান ও মিমের বাপের বাড়িতে খবর দেয়া হয়। পরে মিমের বাড়ির লোকজন এসে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরও বলেন, হঠাৎ কি কারণে মৃত্যু হলো এটা আমরা জানি না। আমার পুত্রবধূ খুবই ভালো ছিলো। তার সাথে কারোর কোনো ঝামেলা ছিলো না।
স্বামী রমজান বলেন, আমার স্ত্রীর সাথে খুবই ভালো সম্পর্ক ছিলো। আমাদের মাঝে কখনো ঝামেলা হয়নি। গতকাল রাতে আমি বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি আমার স্ত্রী কোন কথা বলছে না। পরে হাসপাতালে নেয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তিনি আরও বলেন, আমার ১১ মাসের সন্তান মারুফকে এখন কে দেখবে? মা ছাড়া কারোর কাছেই থাকেনা আমার ছেলেটা। এখন কার কাছে থাকবে বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
মিম খাতুনের পিতা লাবলু বলেন, গতকাল রাতে এশার আজানের পর আমাকে জানানো হয় মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমি দ্রুত যেখানে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে চুপচাপ শুয়ে আছে। মেয়ের মুখে কোন কথা বা নড়াচড়া নেই। পরে আমরা দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি মেয়েকে। ডাক্তার বললেন আমার মেয়ে আর বেঁচে নেই। তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ে আর জামাইয়ের মধ্যে খুবই মিল ছিলো। তাদের বিরুদ্ধে কখনো কিছুই শুনিনি। আমাদের কোন অভিযোগ নেই।
এদিকে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মিম খাতুনের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে হাসপাতালে থাকা নিয়োজিত পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দুই পরিবারের সাথে কথা বলেছি। প্রাথমিকভাবে সন্দেহজনক কিছু পাইনি। এছাড়া মেয়ের পিতার কোন অভিযোগ নেই। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মিম খাতুনকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তার শরীরে কোনো আঘাত কিংবা সাপের কামড়ের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। অল্প বয়সীদের স্টোকের ঝুঁকিও অনেক কম থাকে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনি বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।