মেহেরপুর অফিস:
মোবাইলফোনে আপত্তিকর ভিডিওধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির মামলায় মেহেরপুরে এক নারীসহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ভোরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, পৌর শহরের টিঅ্যান্ডটি এলাকার আটলান্টিক হোটেলের মালিক মতিয়ার রহমান (৫২), তার ছেলে মামুন রহমান ও মোছা. ছন্দা খাতুন (২৭)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে গত ২২ নভেম্বর সদর উপজেলার আমঝুপি বাজারের ব্যবসায়ী মনোয়ার হোসেন সদর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়া এলাকার রুমানা ইয়াসমীন ওরফে রুমা (৪৫), তার সহযোগী বিলকিস রাবেয়া ওরফে টুম্পা (২৫), শাজাহান (২৬) ও হাসান আলীকে (২৮) গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে মঙ্গলবার রাতে এই তিনজনকে ওই মামলায় জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি নারী চক্র গড়ে তুলে মেহেরপুর শহরের অভিজাত শ্রেণির হোটেল আটলান্টিকার মালিক মতিয়ার রহমান ও ছেলে মামুন এলাকার সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী মানুষকে সুন্দরী নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ও ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলো। এই চক্রে বিভিন্ন এলাকার প্রায় ডজন খানেক সুন্দরী নারী রয়েছে। চক্রের নারী সদস্যরা বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে হোটেল আটলান্টিকায় নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে, গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেখিয়ে শুরু হয় মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি।
সম্প্রতি মেহেরপুর সদর উপজেলার নারী চক্রের প্রধান হোতা প্রিয়া খানকে আসামি করে আমঝুপি গ্রামের মনোয়ার হোসেন নামের এক এনজিও কর্মী একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দেয়ার পর পুলিশ গোপন তথ্য সংগ্রহ শুরু করে। গত ২২ নভেম্বর ব্লাকমেইল করে, অর্থ হাতিয়ে নেয়ার মূল হোতা নাজনীন খান প্রিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। প্রিয়া খানকে গ্রেফতারের পর তার ২দিনের রিমা- মঞ্জুর হলে, এই চক্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসে। তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার ভোরে মেহেরপুরের হোটেল আটলান্টিকায় অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। হোটেল মালিক মতিয়ার রহমান, ছেলে মামুনসহ ছন্দা নামের এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।