কিয়েভ দখলে মরিয়া মস্কো : আবাসিক এলাকায় রকেট হামলা অব্যাহত

বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণের পরামর্শ পুতিনের : তুরস্কে আলোচনায় বসবেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মাথাভাঙ্গা মনিটর: রুশ প্রেসিডেন্ট ভøলাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে রাশিয়া যে কোনো উপায় অবলম্বন করতে প্রস্তুত রয়েছে। যে কোনো মূল্যে এ লক্ষ্য অর্জন করা হবে। এটা আলোচনা অথবা যুদ্ধ যে কোনোভাবেই হতে পারে। অপরদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমাদের মাটিতে যুদ্ধের নামে যারা নৃশংসতা করছে, তাদের কাউকে ছাড়বো না। আমরা প্রত্যেককে শাস্তি দেব। অহেতুক প্রাণ কেড়ে নেয়ার জন্য রুশ সেনাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে। কিয়েভের কাছের হোস্তোমেল শহরের মেয়র নিহত হয়েছেন। আগ্রাসনের ১২তম দিনে ইউক্রেনের চার শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে গোলাগুলি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। কিয়েভের দিকে এগিয়ে যাওয়া রাশিয়ার বিশাল সেনাবহরের অগ্রভাগ হোস্তোমেলের পাশের শহর ইরপিনের কাছে চলে এসেছে। দুই থেকে তিন দিন ধরে ইরপিন, হোস্তোমেল ও ওই অঞ্চলের আরেক শহর বুচায় রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের লড়াই চলছে। ইউক্রেনের অভিযোগ, বেশ কয়েকটি শহরে আবাসিক এলাকায় রকেট হামলা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া রাজধানী কিয়েভে খুব শিগগিরই পূর্ণামাত্রার হামলা শুরু করতে পারে রাশিয়া। কিয়েভের চারদিক ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনারা। এ অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে শহরটির বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়েছেন পুতিন। ট্যাঙ্ক-গোলাবারুদ নিয়ে তারা নিকটবর্তী শহর ইরপিনে অবস্থান নিয়েছে। তবে রাশিয়ার দাবি-খারকিভ, চেরনিহিভ, সুমি ও মিকোলাইভ শহরকে অবরুদ্ধ করার দিকেই এখন রুশ সামরিক বাহিনী মূল নজর দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের দাবি-রুশ সেনাদের হটিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় শহর চাউহিউভ পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তাদের বাহিনী। প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে তৃতীয় দফা বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুপক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে সোমবার এ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। তুরস্কে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাবরভ এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। এ বৈঠক আগামী বৃহস্পতিবার তুরস্কের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় প্রদেশ আনতালিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের এক শুনানিতে অংশ নিতে রাশিয়া অস্বীকার করেছে। সোমবার নেদারল্যান্ডসের শহর হেগে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। চলমান রুশ আগ্রাসন বন্ধে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের প্রতি ইউক্রেন অনুরোধ করেছে।

সোমবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøলাদিমির পুতিনের মধ্যে টেলিফোন-আলাপ হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা আলাপকালে পুতিনকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানান ম্যাক্রোঁ। একই সঙ্গে তিনি ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন। জবাবে পুতিন বলেন, আলোচনা অথবা যুদ্ধ যেভাবেই হোক রাশিয়া লক্ষ্য অর্জন করবেই। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের জাতীয়তাবাদীরা বেসামরিক মানুষজনকে শহর থেকে বের হতে বাধা দিচ্ছে। আর এ কারণেই রোববার মারিওপোল ও ভলনোভাখা শহরে ‘যুদ্ধবিরতি’ ভেস্তে গেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, রুশ সেনারা সর্বাত্মক আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ বলেন, কিয়েভে হামলা করতে যুদ্ধ সরঞ্জামাদি প্রস্তুত করছে রুশ বাহিনী। ট্যাঙ্ক- গোলাবারুদ নিয়ে কিয়েভের নিকটবর্তী শহর ইরপিনে তারা অবস্থান নিয়েছে। সাঁজোয়াযানগুলোতে বেলারুশ থেকে আসা জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে। কিয়েভের প্রবেশমুখে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার লম্বা সেনাবহর মোতায়েন করেছে মস্কো। তবে মস্কোর কর্মকর্তারা জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভ, চেরনিহিভ, সুমি এবং দক্ষিণের মিকোলাইভ শহরকে অবরুদ্ধ করার দিকে এখন মূল নজর দিচ্ছে রুশ সামরিক বাহিনী। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। ১২ দিন ধরে চলা যুদ্ধে রোববার পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অপরদিকে ১১ হাজার রুশ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি ইউক্রেনের। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, তাদের বিশ্বাস গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার সেনারা খুবই কম এগোতে পেরেছে। ইউক্রেনের যোদ্ধাদের শক্ত প্রতিরোধ আর দুর্বল সরঞ্জাম সহায়তার কারণে তারা ব্যাপক বাধার মুখে পড়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিদিনের গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী-রাশিয়া খুব তাড়াতাড়ি তাদের পরিকল্পিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে, সেই সম্ভাবনা খুব কম। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ইউক্রেনের শহরগুলোর সামরিক ও বেসামরিক এলাকায় বেশ বড় আকারে রুশ বিমানের গোলাবর্ষণ বেড়েছে। কিয়েভসহ চার শহরে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা : রাজধানী কিয়েভসহ চার শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে গোলাগুলি বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম জানায়, সোমবার সকাল ১০টায় রাজধানী কিয়েভসহ খারকিভ, মারিউপোল ও সুমি শহরে মানবিক করিডর চালু করা হয়। তবে ইউক্রেনের সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। গত কয়েক দিনে দুই দফায় ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মারিউপোল শহর থেকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে বেরিয়ে যেতে অস্ত্রবিরতির ঘোষণা করা হলেও তা সফল হয়নি। কিয়েভেরও চারদিক ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনারা। এ অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে শহরটির বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। রোববার সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি কিয়েভবাসীর প্রতি এ আহ্বান জানান।

যুদ্ধে যারা নৃশংসতা করছে কাউকেই ছাড়ব না : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনে কত পরিবার তাদের স্বজনদের হারিয়েছে। আমরা ক্ষমা করব না, আমরা ভুলে যাব না। আমরা প্রত্যেককে শাস্তি দেব। রোববার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি আরও বলেন, আমাদের এ মাটিতে যুদ্ধের নামে যারা নৃশংসতা করছে, তাদের কাউকে ছাড়ব না। যুদ্ধ বাধাতে দায়ী ব্যক্তিদের হুঁশিয়ার করে জেলেনস্কি বলেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের ভূখ-ে যুদ্ধাপরাধ করছেন। অহেতুক প্রাণ কেড়ে নেওয়ার জন্য রুশ সেনাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধবাজদের কবরে যাওয়া ছাড়া রক্ষা নেই। এমন অবস্থায় পশ্চিমা নেতাদের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কিয়েভে পরিখা খনন করে এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন ঠেকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিয়েভ থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের ছোট্ট শহর ইরপিনে আর্টিলারি এবং বোমা হামলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেখান থেকে প্রাণভয়ে পালাচ্ছেন মানুষ। ইউক্রেন বলছে, মানবিক করিডরের নামে শরণার্থীদের বেলারুশ অথবা রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার রাশিয়ান প্রস্তাব ‘পুরোপুরি অনৈতিক।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, এটা ‘পুরোপুরি অনৈতিক’ ব্যাপার। মানুষের দুর্দশাকে ব্যবহার করে টেলিভিশনের গল্প তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, তারা ইউক্রেনের নাগরিক, ইউক্রেনের ভেতর দিয়েই তাদের চলাফেলার অধিকার থাকা উচিত। এদিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের বেলারুশ বা রাশিয়ায় চলে যেতে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট অনুরোধ করেছেন বলে যে কথা প্রচার করা হচ্ছে-তা সঠিক নয়। রাশিয়ায় যাওয়ার কোনো করিডরের জন্য প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট কোনো প্রস্তাব করেননি। বেসামরিক মানুষজনকে (যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে) যেতে দেওয়ার জন্য তিনি বারবার অনুরোধ করেছেন এবং জরুরি সহায়তা নিয়ে যানবাহন যেতে দিতে বলেছেন। তুরস্কে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাবরভ এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা। এ বৈঠক আগামী বৃহস্পতিবার তুরস্কের ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় প্রদেশ আনতালিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার এ তথ্য জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, এক কূটনৈতিক ফোরামের সময় বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বসবেন। এ বৈঠকে তিনিও উপস্থিত থাকবেন। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের মধ্যে এই প্রথম দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে বসতে সম্মত হওয়ার খবর জানা গেল। প্রায় দুই সপ্তাহের তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে তৃতীয় দফা বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। দুপক্ষের প্রতিনিধিদের মধ্যে সোমবার এ আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। আলোচনার স্থান ও সঠিক সময় এখনো স্পষ্ট নয়। এর আগে দুদেশের প্রতিনিধিরা বেলারুশে দুদফা বৈঠক করেন। সেখানে দুটি শহরে অস্ত্রবিরতির বিষয়ে দুপক্ষ একমত হয়। মারিওপোল ও ভোলনোভাখ শহরে সাময়িক অস্ত্রবিরতির পর রাশিয়া আবারও হামলা শুরু করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ইউক্রেনের হোস্তোমেল শহরের মেয়র নিহত : কিয়েভের কাছের হোস্তোমেল শহরের মেয়র গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে শহর কর্তৃপক্ষ জানায়, মেয়র ইউরি ইলিচ প্রাইলিপকো খাবার ও ওষুধ বিতরণ করছিলেন। এ সময় অপর দুজনসহ তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। বাকি দুজনের পরিচয় ফেসবুকে জানানো হয়নি। হোস্তোমেল শহর কর্তৃপক্ষ বলেছে, মেয়রকে কেউ রুশ সেনাদের গোলাগুলির মধ্যে যেতে বলেনি। তিনি হোস্তোমেলের জন্য, নিজেদের মানুষের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। একজন নায়কের মতো তার মৃত্যু হয়েছে। হোস্তোমেলের অবস্থান কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমে। এ শহরে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি রয়েছে। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর প্রথম দিকে বিমান ঘাঁটি দখলে নেন রুশ সেনারা। পরে কয়েক দফায় তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের লড়াই হয়। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন-রাশিয়ার সেনাদের হটিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় শহর চাউহিউভ পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তাদের বাহিনী। তবে তাদের এ দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি। এক ফেসবুক বার্তায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানায়, যুদ্ধে রুশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যুদ্ধে রাশিয়ার দুজন উচ্চপদস্থ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। খারকিভের ২৩ মাইল দূরের চাউহিউভ কৌশলগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। এক সপ্তাহ ধরে শহরটির ওপর ভারী গোলাবর্ষণ করে রুশ বাহিনী। চাউহিউভ শহরে ৩১ হাজার মানুষের বসবাস।

পোল্যান্ড বলেছে, দেশটি তার যুদ্ধবিমানগুলো ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করবে না এবং পোল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলোকেও ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না। পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর রোববার এক টুইটবার্তায় এ কথা জানায়। রোববার মোলদোভা সফরে গিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, তার দেশ পোল্যান্ডের যুদ্ধবিমানগুলোকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনের পাইলটদের যুদ্ধবিমান পরিচালনার কৌশল রপ্ত থাকায় তারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাৎক্ষণিকভাবে এগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করতে পারবে। এর বিনিময়ে আমেরিকা পোল্যান্ডকে এফ-১৬ জঙ্গিবিমান দেবে। কিন্তু পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে প্রকাশিত টুইটার বার্তায় বলা হয়েছে-পোল্যান্ড তার জঙ্গি বিমানগুলোকে ইউক্রেনে পাঠাবে না। তবে আমরা অন্য সব ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সহযোগিতা করব।

ইউক্রেনকে মানবিক সহায়তা দেবে চীন:
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে অবিলম্বে মানবিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। সোমবার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এ ঘোষণা দেন। ওয়াং ই বলেন, চীনের রেডক্রস ইউক্রেনকে যত দ্রুত সম্ভব মানবিক সহায়তা দেবে। রুশ-চীন সম্পর্কেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই দেশের বন্ধুত্বকে তিনি ‘ইস্পাতকঠিন’ হিসাবেও আখ্যায়িত করেন। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে রুশ অভিযানের নিন্দা জানায়নি চীন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনের বিদ্যমান পরিস্থিতির নেপথ্যের কারণগুলো জটিল। এগুলো রাতারাতি ঘটেনি। একদিনে তিন ফুট বরফ তৈরি হয় না। জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য আগুনে ঘি ঢালা এবং সংঘাতকে আরও তীব্রতর করে তোলা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান ওয়াং ই। তিনি বলেন, চীন ইতোমধ্যেই শান্তি আলোচনার জন্য কিছু কাজ করেছে এবং সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

রাশিয়ার ১০০ ধনকুবের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা:
রাশিয়ার ১০০ জন ধনকুবের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ড নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া শাস্তি এড়ানোর জন্য নিউজিল্যান্ডকে যেন ঘাঁটি হিসাবে রুশ ধনকুবেররা ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, ১০০ রুশ ধনকুবেরের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। নতুন নিয়মের আওতায় মস্কোতে নিবন্ধিত প্রমোদতরি, জাহাজ ও বিমানগুলোকে নিউজিল্যান্ডের আকাশসীমা বা জলসীমায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

ইউক্রেনে ৬০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া:
যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, ইউক্রেনে এখন পর্যন্ত ৬০০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ পরিচালনায় রাশিয়ার যে সক্ষমতা রয়েছে, সেটার প্রায় ৯৫ শতাংশই ইউক্রেনে জড়ো করতে পেরেছে দেশটি। তবে কিয়েভে বিক্ষোভকারীদের ওপর রুশ বাহিনীর গুলি চালানোর খবর এবং সাময়িক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের খবর নিশ্চিত করতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।

ইউক্রেনে ৩৬৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত:
জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩৬৪ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৫টি শিশু রয়েছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ ভারী গোলাবর্ষণ, বিস্ফোরণ বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হতাহতদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ucraneইউক্রেনরাশিয়া
Comments (0)
Add Comment