হ্যাকারের কবলে কৃষি ব্যাংক

 

স্টাফ রিপোর্টার: হ্যাকারের কবলে পড়েছে সরকারি মালিকানার বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। গত বুধবার থেকে ব্যাংকটি হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে গতকাল রোববার কাউন্টার থেকে সীমিত পরিসরে লেনদেন হলেও অনলাইনভিত্তিক সব ধরনের লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে। ঈদের আগে এরকম ঘটনায় চরম গ্রাহক অসন্তোষ ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হ্যাকারদের কবল থেকে তারা এখন পুরোপুরি মুক্ত। জানা গেছে, গত বুধবার থেকে হ্যাকাররা ব্যাংকের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিলেও কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন বৃহস্পতিবার সকালে। ওই দিন অফিসে গিয়ে কেউ কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার ওপেন করতে পারেননি। ফলে এক শাখা থেকে আরকে শাখা বা আরেক ব্যাংকে তহবিল স্থানান্তর, অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক, স্টেটমেন্ট নিতে সমস্যা দেখা দেয়। পরে জানতে পেরেছেন বুধবার অনলাইন ভিত্তিক যেসব লেনদেন করা হয়েছে সেখানে ব্যাপক অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে। এক অ্যাকাউন্ট থেকে আরেক অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর হলেও স্থিতি একই আছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকা স্থানান্তর দেখালেও আরেক হিসাবে জমা হয়নি। এ নিয়ে শুক্র ও শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেশের সব শাখা খোলা রেখে রিকভারির চেষ্টা করা হয়। রোববারও পুরোপুরি সমাধান করা যায়নি। ঈদের মরসুম হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। টাকা খোয়া গেছে কি না এ নিয়ে অনেকে আতঙ্কে আছেন। কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শওকত আলী খান রোববার রাতে বলেন, হ্যাকাররা ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল এটা ঠিক। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে পরামর্শ করে আমরা পুরোপুরি রিকভারি করতে পেরেছি। গ্রাহক সেবায় কোনো বিঘœ হচ্ছে না। কোনো গ্রাহকের টাকা বা অন্য কোনো ডকুমেন্ট খোয়া যায়নি। আমরা আমাদের বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে ‘নস্ট্রো’ হিসাব চেক করেও দেখেছি সব ঠিক আছে। কীভাবে কী হয়েছে তা জানতে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। রোববার কৃষি ব্যাংকের কয়েকটি শাখা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যাংকের এমডি জরুরি একটি জুম মিটিং করে সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন। তবে কী ঘটেছে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। গত বৃহস্পতিবার সব শাখায় সেবা বন্ধ ছিল। রোববার সীমিত পরিসরে কাউন্টার থেকে লেনদেন করা হয়েছে। তবে এখনও আরটিজিএস, বিইএফটিএন, বিএসিএইচসহ অন্য সব ধরনের অনলাইনভিত্তিত লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে। তারা জানান, বৃহস্পতিবার কেউ কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার ওপেন করতে না পারায় নিজেরা একজন আরেকজনের সঙ্গে আলোচনা করতে থাকেন। পরে এক শাখা আরেক শাখা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও সমাধান না পেয়ে প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন। এর মধ্যে কর্মকর্তাদের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপের মাধ্যমে সবাই জানতে পারেন তাদের ব্যাংকের সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হ্যাকার। তবে আসলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, কারও টাকা খোয়া গেছে কি না, এসব তারা পরিষ্কারভাবে কিছু জানেন না।

Comments (0)
Add Comment