স্টাফ রিপোর্টার: হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার হার্টের দুটি ব্লকের চিকিৎসা ছাড়াও অন্যান্য জটিলতা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেবে মেডিকেল বোর্ড। রোববার চিকিৎসকদের একজন জানান, খালেদা জিয়ার হার্ট, লিভার ও কিডনির জটিলতার কোনো কোনোটা একটু বেড়েছিল। সে জন্য তাকে চেকআপ ও চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত বছর জুন মাসে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। তার মধ্যে একটায় রিং পরানো হয়। বাকি দুটির ব্লক তখন ঝুঁকিপূর্ণ না হওয়া এবং শারীরিক দিক বিবেচনায় চিকিৎসকরা তাতে রিং পরানো থেকে বিরত থাকেন। এখন আবার তার হার্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে তার এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হয়েছে। অধ্যাপক সাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড আগে থেকে তার এই চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে অধ্যাপক এফএম সিদ্দিকী, অধ্যাপক নূর উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক একিউএম মহসিন, অধ্যাপক শেখ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক জিয়াউল হক এবং অধ্যাপক সাদেকুল ইসলাম রয়েছেন। এছাড়া লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানসহ অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিএনপি চেয়ারপারসনের মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন বলে জানান তিনি। হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে সার্বক্ষণিক দেখাশোনা করছেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর সহধর্মিণী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
এদিকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। ভর্তি হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের বেশকিছু পরীক্ষা মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে করা হয়েছে। ওইসব পরীক্ষার রিপোর্ট আসা শুরু হয়েছে। মেডিকেল বোর্ড রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী পর্যায়ে যে চিকিৎসা দেয়া প্রয়োজন তা করবে। তবে প্রাথমিকভাবে মেডিকেল বোর্ড এক দফা বসেছে। আজও বোর্ডের কয়েকজন সদস্য তার শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার নিয়মিত চেকআপের পাশাপাশি কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছিলো। সে জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এখানে নিয়মিত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেই চিকিৎসায় তার শরীর সাড়া দিচ্ছে। হাসপাতালে খালেদা জিয়া কয়দিন থাকতে পারেন জানতে চাইলে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, এটা মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত এবং তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে। এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। ৭৮ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। অসুস্থতার মধ্যে গুলশানে ‘ফিরোজা’য় চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে তার চিকিৎসা চলছিলো। খালেদা জিয়াকে তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।