স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর হাতিরঝিলে একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উঠে গেছে সড়কদ্বীপে। এতে গাড়ি ও গাড়িটির চালকের সামান্য ক্ষতি হলেও এক তরুণী আরোহীকে পুলিশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তরুণীর স্বামী দাবি করেন, ওই দুর্ঘটনায়ই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু মৃত তরুণীর শরীরে দুর্ঘটনায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি; পাওয়া যায় ভিন্ন ধরনের আঘাতের চিহ্ন। এমন আলামত দেখে সন্দেহ হলে পুলিশ ওই দম্পতির গুলশানের বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জব্দ করে। সেখানে দেখা যায়, বাড়ি থেকে চারজন মিলে নিথর সেই গৃহবধূকে বের করে গাড়িতে তুলেছে। শেষে কথা পাল্টে স্বামীর দাবি, অসুস্থ স্ত্রীকে হাসপাতালে নেয়ার সময় দুর্ঘটনা ঘটে!
গতকাল শনিবার এমনই রহস্যজনক ঘটনায় মৃত ঝিলিক আলম (২৩) নামে ওই তরুণীর স্বামী সাকিবুল আলম (৩৫) ও তার বাড়ির এক গৃহকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। ঝিলিকের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, বাড়িতেই নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে তাকে। এরপর দুর্ঘটনার নাটক সাজিয়ে হত্যাকা- ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারাও বলছেন, বাড়িতেই ঝিলিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি কী কারণে, কিভাবে অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন এবং দুর্ঘটনার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় সাকিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে আমবাগান এলাকায় একটা প্রাইভেট কার ফুটপাতে উঠে গেছে খবর পেয়ে সেখানে যাই। কাছে গিয়ে দেখি পেছনের সিটে একজন নারী শুয়ে আছেন। তখন সাকিব বললেন তার স্ত্রী আহত হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে ঝিলিককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার শরীরে দুর্ঘটনার মতো কোনো চিহ্ন নেই। সাকিব তার বাড়ি গুলশানে জানালেও কী কারণে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন সেটাও পরিষ্কার করে বলেননি। এতে সন্দেহ হয়।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ঝিলিকের পা, মাথা ও গলায় মারপিটের মতো আঘাতের চিহ্ন আছে। সন্দেহ হলে স্বামী সাকিবকে আটক করা হয়। ওই সময় তিনি একজন এমপির নাতি বলে পরিচয় দিয়ে চলে যেতে চান।