শ্রীলংকার মতো অবস্থা বাংলাদেশে হবে না : পরিকল্পনামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলংকার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করা চলে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তিনি বলেছেন, শ্রীলংকার মতো অবস্থা বাংলাদেশের হবে না। যদিও কেউ কেউ শ্রীলংকার ওপর বাংলাদেশকে বসিয়ে বিশ্লেষণ করছেন। কিন্তু সেটি ঠিক নয়। বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা দুটি আলাদা অর্থনীতি। সক্ষমতা ও বৈশিষ্ট্যও আলাদা। সুতরাং একই রকম ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। ব্রিফিং বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম, শরিফা বেগম প্রমুখ।
শ্রীলংকার সর্বশেষ আর্থিক সংকট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার কোনো অপ্রয়োজনীয় কাজ করে না কিংবা কোনো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে না। তবে কতিপয় মহল শ্রীলংকার বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করছে, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক বিবেচনায় মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোও ভিন্ন। তবে আমরা বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের মতামতগুলোর ব্যাপারে গভীরভাবে দৃষ্টি রাখছি। আমি মনে করি শ্রীলংকার পরিস্থিতির মতো কোনো আশঙ্কা করার সঙ্গত কারণ নেই।’ এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশিদ জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে পরামর্শকদের ওপর নির্ভরতা কমানোর বিষয়ে আন্তরিক চেষ্টা চলছে। এদিকে শহর উন্নয়ন ওসুশাসন নিশ্চিতকরণসহ ১২ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৭ হাজার ৯৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৪৩২ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ৫৯৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিটি গভরন্যান্স প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ১৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ থেকে ২ হাজার ২১৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। চলতি বছর থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। এ প্রকল্পে পরামর্শক ব্যয় ৩৭২ কোটি টাকা ধরা হয়েছে কেন এমন প্রশ্নর জবাবে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মামুন-আল-রশীদ বলেন, পরামর্শক ব্যয় লাগবে। কেননা এলজিইডি ড্রয়িং বা ডিজাইনে এখনো দক্ষ হতে পারেনি। তবে দক্ষতা বৃদ্ধিও প্রচেষ্টা চলছে। এছাড়া এত বড় প্রকল্পে যে টাকা পরামর্শক খাতে ধরা হয়েছে সেটি খুব বেশি নয়।

Comments (0)
Add Comment