শীতে করোনা মোকাবিলার সার্বিক প্রস্তুতি আছে

স্টাফ রিপোর্টার: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ও শীতকালে সংক্রমণ বৃদ্ধির যে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আসন্ন শীত মৌসুমে যাতে করোনা বাড়তে না পারে, সেজন্য ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস নীতি’ বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্পিকার ডক্টর শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের পয়েন্ট অব এন্ট্রিগুলোতে স্ক্রিনিং অব্যাহত রয়েছে। বিদেশফেরতদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোভিড প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নেয়া কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিন কোটি ভ্যাকসিন আমদানির লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্ব, সমুচিত সিদ্ধান্ত এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনায় এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারিকে সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রকোপ কিছুটা কমে এলেও তা আসন্ন শীতকালে আবারও বেড়ে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। ইতোমধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকায় দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে।

এদিকে, সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম শিমুলের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে খাদ্য নিরাপত্তা সুদৃঢ় হয়েছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাত সত্ত্বেও প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার নীতি গ্রহণ করে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে থেকে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে কৃষি উন্নয়নে রোল মডেল।

ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন সময়ে আমরা উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর কাছ থেকে জরুরি আপৎকালীন অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ জাপানের কাছ থেকে আপৎকালীন সহায়তা হিসেবে ২ হাজার ৭শ’ ২০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে। কোভিড প্রতিরোধের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ৬শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, করোনাভাইরাসের টিকা ও চিকিৎসাসামগ্রী সংগ্রহের জন্য এডিবি আরও ৩০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিচ্ছে। করোনাকালীন কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বব্যাংক ১শ’ ৫ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে। আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ১শ’ ১০ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা পেয়েছি। জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের জন্য ১শ’ ১৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা হিসেবে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচারে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আমাদের জন্য ১শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বলে তিনি জানান।

জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, সব ধরনের নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।

 

Comments (0)
Add Comment