স্টাফ রিপোর্টার: সময় যত গড়াচ্ছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) চলমান সংকট ততই যেন ঘনীভূত হচ্ছে। উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দফায় দফায় ভার্চুয়ালি বৈঠকের পরও নিজেদের এক দফা দাবি থেকে সরে আসছেন না আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগের ইস্যু ছাড়া অন্য কোনো বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা আর আলোচনায় আগ্রহী নন বলেও জানিয়েছেন। আন্দোলনের ১১তম দিনে আমরণ অনশনে যোগ দিয়েছেন নতুন আরও কয়েক শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের ফটকে অবস্থান নিয়ে কাউকে ভিতরে যেতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। যে কোনো সময় গ্যাস ও পানির সংযোগও বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা। সংকট নিরসনে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে যান। ভবনের ১২৯ নম্বর রুমে আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। দুই ঘণ্টার বৈঠকে মনে হয়েছিল হয়তো অবশেষে আন্দোলনে বরফ গলবে। কিন্তু বৈঠক থেকে কোনো সমাধান আসেনি। গত শনিবার রাতে বৈঠক শেষে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অনশনকারী ২৩ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৭ জন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এভাবে অনশন চললে অন্যরাও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়বে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কথা হয়েছে। রবিবার (গতকাল) শিক্ষার্থীদের লিখিতভাবে তাদের দাবি-দাওয়া দেয়ার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। আইনগত ও একাডেমিক সমস্যা যাতে না হয় সেজন্য তিনি সব বিষয় দেখবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন।’ কিন্তু গতকাল আর বৈঠক হয়নি।
পদত্যাগ ইস্যু ছাড়া আলোচনা নয় : আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গতকাল জানিয়েছেন, তারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় রাজি। তবে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ ইস্যু ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে তারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী নন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে নাফিসা আনজুম ও মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘ভার্চুয়াল বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো আলোচনা করেননি। উনি অন্য সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন। এ মুহূর্তে আমাদের এক দফা দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ। এই ইস্যু ছাড়া আর কোনো বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করতে আগ্রহী নই। যদি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে আলোচনা করতে শিক্ষামন্ত্রী আগ্রহী হন তাহলে আমরা আলোচনায় আবারও বসতে রাজি আছি।’