স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) অনুমোদন ছাড়া প্রকাশিত বেসামরিক গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঠাতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায় থেকে সবার প্রতিবেদন এখনও না আসায় রোববার তাগিদ জানিয়ে জামুকার মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল চিঠি পাঠান। গতকাল রোববার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার ৭৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায়ই সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, “৩৭৬ উপজেলায় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ১১৪ উপজেলা থেকে এখনও প্রতিবেদন আসেনি।” ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন প্রেরণ বিলম্ব প্রসঙ্গ’ শীর্ষক চিঠিটি জামুকার ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সুপারিশ ছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে গত ৩০ জানুয়ারি ও ৬ ফেব্রুয়ারি দেশের সব উপজেলা ও মহানগর পর্যায়ে যাচাই-বাছাই হয়। ওই যাচাই-বাছাই শেষে তিন কার্যদিবসের মধ্যে নির্ধারিত ছকে প্রতিবেদন জামুকা কার্যালয়ে পাঠানো জন্য নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এখনও অনেক উপজেলা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি, যা ‘দুঃখজনক’ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। “এই প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে একদিকে যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিতকরণ কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে, অন্যদিকে উপজেলা পর্যায়ে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। এটি কোনোমতে কাম্য নয়।” যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কোনো ‘বিতর্ক বা প্রশ্ন’ নেই, তাদের তালিকা ২৬ মার্চ প্রকাশের ঘোষণা সম্প্রতি দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী ও জামুকার চেয়ারম্যান মোজাম্মেল। এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি ও ৬ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় (ইউএনও) এবং মহানগর পর্যায়ে ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) কার্যালয়ে জামুকার অনুমোদন ছাড়া গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই কাজ হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভারতীয় তালিকা বা লাল মুক্তিবার্তা বা মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃত ৩৩ ধরনের প্রমাণকে অন্তর্ভুক্ত থাকলে, তিনি যাচাই-বাছাই এর আওতাবর্হিভূত থাকবেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের ৭(ঝ) ধারার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অনুমোদন ছাড়া যেসব বেসামরিক বীর মুক্তিযোদ্ধার গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, কাউন্সিলের ৭১তম সভায় তা যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইনের ৭(ঝ) ধারায় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন করে সরকারের কাছে সুপারিশ করার এখতিয়ার এই কাউন্সিলের উপর ন্যস্ত করা আছে। প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশের অংশ হিসেবে জামুকার অনুমোদন ছাড়া প্রকাশিত বেসামরিক গেজেটভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই করা হচ্ছে।