স্টাফ রিপোর্টার: দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ নিম্নমানের বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পেরে বস্তা ধরেই পাশের ডোবা ও গর্তে ফেলে দিয়েছেন তারা। কেউ কেউ দর্শনা পৌরসভার ময়লা ফেলার ভ্যান গাড়িতে করে দূরে ফেলে দিয়ে আসছেন। এর ফলে স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী ও সিএন্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। জানা যায়, দেশে যখন পেয়াজের ঝাঝ মারাত্মক আকার ধারণ করেছিলো ঠিক তখনই সরকার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বন্দর বন্ধ থাকলেও গত মে মাসের ৯ তারিখ ভারত থেকে প্রথম একটি পেঁয়াজের বড় চালান দর্শনা আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। দর্শনা আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট মীর লিয়াকত আলি জানান, গত ৯ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত ২৮ হাজার ৫০ মেট্রিক টন এবং ১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ২৪ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভারত থেকে দর্শনা হয়ে রেলপথে আমদানি করা হয়েছে। দর্শনা বড় বাজার কমিটির সাবেক মেম্বার ও ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, দর্শনা বন্দর থেকে ৪/৫ দিন আগে আমি ও আমার মত আরও ২০/২২ জন কাচামাল ব্যবসায়ী প্রায় শতাধিক মণ আমদানি করা পেয়াজ কিনেছিলাম। কিন্তু এ পেয়াজ যে এতো নিম্নমানের তা আগে জানা ছিল না। একদিন পরেই দেখি বস্তার পেয়াজে পচন ধরে নষ্ট ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ফলে পাশের গর্তে ফেলে দিতে হলো। কেউ কেউ দর্শনা পৌর সভার ময়লা ফেলা ভ্যান গাড়িতে করে দুরে ফেলে দিয়ে আসছেন। আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দর্শনা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাবির হোসেন মিকা জানান, বিনষ্ট হওয়া পেয়াজ ফেলে দেয়ার ঘটনাটি আমারা শুনেছি। পেয়াজ আমদানিকারক প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম জানান, ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে থেকে আমদানি করা পেয়াজ দর্শনা বন্দরে পৌঁছাতে পৌঁছাতে পেয়াজ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমদানি করা পেয়াজ দর্শনার ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে ১৫/১৬ টাকা কেজি দরে কিনেছিল। দর্শনা সি এন্ড এফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও পেয়াজ আমদানীকারক প্রতিনিধি আতিয়ার রহমান হাবু জানান, পেয়াজগুলো দু একদিন রেখে বিক্রি করতে পারলে লাভবান হতাম। কিন্তু পেয়াজ ৪/৫ দিনের মধ্যেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আমারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দর্শনা কাস্টমস সুপারিনটেনডেন্ট মো: রুহুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, একে তো বৃষ্টির সময় তাতে ট্রেনে মালামাল আসার পথে বৃষ্টিতে ভিজে যায়। তাছাড়া এক দেশ থেকে অন্য দেশে আসা মালামালের কাগজপত্র প্রস্তুত হতে সময় লাগে, যার জন্য এদেশে পৌঁছানোর পর সমস্যা হয়। তবে পেয়াজ আমদানিকারকরা অভিযোগ করলে ভাল হয়। যেহেতু কাঁচামাল, এটা দ্রুত স্থানান্তর করতে না পারলে সমস্যা থেকেই যাবে।