স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশে একেবারে তৃণমূলের যে মানুষগুলো, অবহেলিত মানুষগুলো রয়েছেন তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা চাই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীতা অর্জন এবং আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সেটা যেন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও বিকশিত হয়, সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে। কাজেই সেই প্রচেষ্টাতেও আমরা সাফল্য অর্জন করব বলে আমি বিশ্বাস করি।’
‘একুশে পদক ২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে রোববার প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। যারা সম্মাননা পেয়েছেন এবং যারা এখনো কাজ করে যাচ্ছেন-সবাইকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আমাদের এই গুণীজনরাই তো পথ দেখাবে। আপনাদের এই অবদান বিভিন্ন ক্ষেত্রে রয়েছে বলেই আজকে আমাদের এই অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে। আপনাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন দেশের কল্যাণে কাজ করে সেটাই আমি চাই।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের মাঝে পদক বিতরণ করেন। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার ২৪ বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক দিয়েছে সরকার। তাদের প্রত্যেককে নগদ ৪ লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়। এবার ভাষা আন্দোলনে মোস্তফা এমএ মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে অধ্যক্ষ মো. মতিউর রহমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউএবিএম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার এ পদক পেয়েছেন। নৃত্যে জিনাত বরকতুল্লাহ, সংগীতে নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান বেনু, অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ পদক পেয়েছেন। সাংবাদিকতায় এমএ মালেক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মো. আনোয়ার হোসেন এবং শিক্ষায় অধ্যাপক ডা. গৌতম বুদ্ধ দাস পদক পেয়েছেন। সমাজসেবায় এসএম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ ডা. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো; ভাষা ও সাহিত্যে কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ; গবেষণায় অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সাত্তার ম-ল, ডা. মো. এনামুল হক, ডা. শাহানাজ সুলতানা এবং ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস পদক পেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আমাদের প্রেরণা দেয়। একুশ মানে মাথা নোয়াবার নয়। একুশের পথ ধরে বহু সংগ্রামের পথ বেয়েই আমাদের স্বাধীনতা অর্জন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এ সংগ্রামে যারা সরাসরি অংশগ্রহণ করেছেন তারা তো বটেই, এর বাইরেও অনেকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। প্রতিটি সংগ্রামে অবদান রয়েছে মানুষের। কেউ সরাসরি রাস্তায় নেমে আন্দোলন যেমন করেছেন ঠিক পাশাপাশি ভাষা-সংস্কৃতির মাধ্যমে-গান, নাটিকা, কবিতা প্রভৃতির মাধ্যমে এ আন্দোলনকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের অবদান সবসময় চিরস্মরণীয়।