সালাউদ্দীন কাজল: ‘আশ্রয়ণের অধিকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার।’ এ সেøাগান সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় মুজিবশতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য ঘর নির্মাণ কাজ একেবারে শেষের দিকে। ফাঁকা জায়গায় মনোরম পরিবেশে সবুজ টিনের ছাউনিতে দৃশ্যমান ঘরগুলো দেখতে সুন্দর লাগছে এবং এসব বাড়ি দেখে ভূমিহীন পরিবারগুলোর মনের আনন্দ যেন ধরে না। আগামী ২৩ জানুয়ারি গৃহহীন পরিবারগুলোর মাঝে বাড়িগুলো হস্তান্তর করা হবে।
জীবননগর উপজেলা প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য চলতি অর্থ বছরে জীবননগর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নে ১৮টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাঁকা ঘর নির্মাণে প্রতিটি ঘরে বাবদ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। নির্মাণাধীন এসব বাড়িতে থাকছে বারান্দাসহ দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর, একটি রান্না ঘর এবং একটি টয়লেট। এরই মধ্যে কাজের অগ্রগতি একেবারে শেষের পথে। আগামী ২৩ জানুয়ারি ঘরগুলো গৃহহীনদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ওই ঘরে বসবাস করার স্বপ্ন দেখছেন গৃহহীন পরিবারগুলো। কবে উঠবে সে ঘরে-এই চিন্তায় রয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন ঘর পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৩ মুহম্মদ শাহীন ইমরান, জীবননগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি মো. হাফিজুর রহমান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন। তারা নির্মাণ কাজের অগ্রগতি এবং কাজের গুনগত মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পরে উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময়কালে তাদের খোঁজখবর নেন।
উপকারভোগী বিরেন সর্দ্দার বলেন, আমার নিজের কোনো জায়গা জমি নেই। শিয়ালমারী সড়কের পাশে সরকারি জায়গায় কোনো রকম ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করি। পরের জমিতে কামলা খেটে যা রোজগার হয় তা দিয়ে কোনো রকমভাবে দু’মুঠো খেয়ে দিনযাপন করি। জমি কিনে ঘর করার মতো টাকা আমার নেই। সরকারি ঘর পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জহুরুল হক ঝন্টু বলেন, সরকারি ঘর পেয়ে অসহায় গরিব মানুষরা মাথা গোজার ঠাঁই পেলো।
উথলী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, নির্মাণাধীন বাড়িগুলো উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। উপকারভোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এ বাড়িত নির্বিঘেœ বসবাস করতে পারবেন।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মুনিম লিংকন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘরগুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। আমি নিজে ঘর নির্মাণ কাজের তদারকি করছি। ইতোমধ্যে কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। কাজের গুনগত মান ঠিক রাখতে সপ্তাহে অন্তত দুবার আমি নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করি। নির্মাণ কাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর বলেন, ভূমিহীন মানুষের বাসগৃহ নির্মাণ করে দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রেষ্ঠ উপহার। যা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা পৃথিবীতে বিরল। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে সারাদেশে এভাবে ৬৫ হাজার ২০০ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ঘর দেয়া হচ্ছে।