আলমডাঙ্গা ব্যুরো: পরকীয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত এক মহিলার বিচারের দাবিতে আলমডাঙ্গার ফরিদপুর গ্রামের কয়েক শ’ নারী-পুরুষ আলমডাঙ্গা থানায় উপস্থিত হয়। গতকাল আলমডাঙ্গা থানায় এ বিষয়ে সালিসের কথা থাকলেও অভিযুক্ত মহিলা উপস্থিত হননি।
লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার ফরিদপুর গ্র্রামের মৃত আজিজুল হক মেম্বারের প্রবাসি ছেলে শামীম রেজা ২০১৩ সালে মুন্সিগঞ্জের মৃত ইমরান হোসেনের মেয়ে নিলুফা ইয়াসমিন রিক্তাকে বিয়ে করেন। বিয়ের প্রায় মাসখানেক পরে শামিম রেজা পুনরায় বিদেশ চলে যান। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর স্ত্রী রিক্তা বাপের বাড়িতে অবস্থান করতেন। প্রথম থেকেই স্ত্রী রিক্তা তার ফুফাতো ভাই বেল্টুর প্ররোচনায় পৃথকভাবে জমি কিনে বাড়ি নির্মাণের জন্য টাকা পাঠাতে তাগাদা দিতেন। এক পর্যায়ে সোনালী ব্যাংক মুন্সিগঞ্জ শাখায় স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন সময়ে টাকা পাঠাতেন শামিম রেজা। তিনি স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে মোট ১৪ লাখ টাকা পাঠান। তাছাড়া দেশে ফিরলে স্ত্রী তার চাকরির জন্য স্বামীর নিকট থেকে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা নেন। এরই মধ্যে স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে পড়েন। দেশে ফেরার পর বিদেশে অবস্থানকালে পাঠানো টাকার হিসেব চাইলে স্ত্রীর সাথে স্বামীর মনোমালিন্য শুরু হয়। স্ত্রী নানা অজুহাত দেখায়। এরই মাঝে গত গত ১০ মার্চ নিলুফা ইয়াসমিন রিক্তা গোপনে ফোন করে তার ফুফাতো ভাই বেল্টুকে শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুরে নিয়ে আসেন। ওইদিনই সুযোগ বুঝে বেল্টুর সাথে রিক্তা পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় বিদেশ থেকে আনা মোবাইলফোন সেট, ল্যাপটপ ও দেড় লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে রিক্তা খাতুন গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলেন। এরই মধ্যে বেল্টুর সাথে রিক্তা খাতুনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক জানাজানি হয়ে যায়। তারা একসাথে ১৮ দিন অজ্ঞাত স্থানে অতিবাহিত করে বলেও লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ২৫ মার্চ শামিম রেজা তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে স্ত্রী তার সাথে সংসার করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গার বেলগাছী ইউনিয়ন পরিষদে সালিস বৈঠক বসলেও অভিযুক্ত রিক্তা খাতুন হাজির হননি। বাধ্য হয়ে স্বামী শামিম রেজা জেহালা ইউনিয়ন পরিষদে সালিসের আবেদন করেন। এ সালিসে একদিন অভিযুক্ত স্ত্রী উপস্থিত হলেও সালিস চলাকালীন সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান। বাধ্য হয়ে শামিম রেজা আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। আসামিপক্ষের অনুরোধে বিষয়ে মিমাংসার জন্য গতকাল আলমডাঙ্গা থানা চত্বরে সালিসের কথা ছিলো। কিন্তু যথারীতি রিক্তা খাতুন উপস্থিত হননি।
এদিকে, স্বামীর সর্বস্ব হাতিয়ে নেয়ায় ও কোনো সালিস বৈঠকে অভিযুক্ত রিক্তা খাতুন উপস্থিত না হওয়ায় ফরিদপুর গ্রামবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। গতকাল ফরিদপুরের কয়েক শ’ নারী-পুরুষ রিক্তা খাতুনের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবিতে থানা চত্বরে উপস্থিত হন।